এসি বাসের ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করে না বিআরটিএ!

52

সামনে ঈদ। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছাড়ছেন অনেকেই। বছরের অন্য সময়ের চেয়ে এই মে মাসে গরমের মাত্রা অনেক বেশি। দীর্ঘ যাত্রাপথে এই গরম থেকে রেহাই পেতে অনেকেই এসি বাসকেই বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, সুযোগ বুঝে এসি বাসের মালিকরাও ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন দ্বিগুণ। আর বাস মালিকদের দাবি, ঈদের সময় ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার পর ফিরতি ট্রিপে বাসগুলোকে প্রায় খালি আসতে হয়। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই তারা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন। এই বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) বলছে, এসি বাসের ভাড়া নিয়ন্ত্রণ তারা করে না।
এসি বাসের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে শুক্রবার (৩১ মে) সকাল ১১টার দিকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গাবতলী বাস টার্মিনালে জে আর পরিবহনে গিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সত্যতা পান। এই কোম্পানির এসি বাসের ভাড়া আগে যেখানে ৭শ টাকা ছিল, ঈদ উপলক্ষে সে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১৩শ টাকা। বিষয়টি নিয়ে একজন যাত্রী অভিযোগ করলে বিআরটিএ-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানা করার প্রস্তুতি নেন।
এ সময় টার্মিনালে বিআরটিএ’র কন্ট্রোল রুমে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মশিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তাকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, জরিমানা বা কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। যাত্রীদের অভিযোগ, দেশের বিভিন্ন উৎসবগুলোর সময় এসি বাসে মালিকরা তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করেন। এ নিয়ে অভিযোগ করেও কোনও প্রতিকার মেলে না, বরং উল্টো তারা টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেন।
জে আর পরিবহনের বাস ঢাকা-মেহেরপুর রুটে চলাচল করে। এই রুটের যাত্রী আহসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই রুটে এসি বাসে আগে ভাড়া ছিল ৭শ টাকা। এখন নিচ্ছে ১৩শ টাকা।’
দ্বিগুণ ভাড়া আদায়কারী জে আর পরিবহনের ম্যানেজার মো. নাজিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদে ফিরতি ট্রিপে কোনও যাত্রী থাকে না। আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে না? আমরা কি লস দেবো? তাই আমরা ভাড়া বেশি রাখছি। এই সময় এটা সবাই করে থাকে। আমাদের যদি লস হয়, তাহলে আমরা কেন যাত্রীসেবা দেবো?’
বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পরিবহনের জন্য আমাদের নির্ধারিত ভাড়ার রেট রয়েছে। কিন্তু, এসি বাসের বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে কোনও ভাড়া নির্ধারিত নেই। এই বাসের ভাড়া মালিকরাই নির্ধারণ করেন। এটা নিয়ে কেউ অভিযোগও করেনি। কেউ অভিযোগ করলে ভবিষ্যতে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।’
দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মশিউর রহমান বলেন, ‘এতে আমরা কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবো না। কারণ বিষয়টি কোনও নিয়ম, নীতিমালা বা আইনি কাঠামোর মধ্যে নেই। মালিকরা গ্রাহকদের সঙ্গে সমঝোতা করেই ভাড়া আদায় করে। ভাড়া যাই হোক সেটা আমরা কিছুই করতে পারবো না।’
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভাড়া আদায়ের একটা সীমারেখা থাকবে। ৭শ টাকার ভাড়া কোনোভাবেই ১৩শ টাকা হতে পারে না।’ পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে মালিকদের সঙ্গে বসতে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মশিউর রহমানকে নির্দেশ দেন সেতুমন্ত্রী।