এলএনজি ফেব্ুরয়ারি থেকেই বাড়ছে সরবরাহ

13

লিকুফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের জন্য ১৫ ফেব্ুরয়ারি মধ্যে শেষ হচ্ছে তিনটি পাইপলাইন নির্মাণকাজ। নতুন তিনটি ও আগের দুটি মিলিয়ে মোট ৫টি পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আসবে। এখন সর্বোচ্চ ৫৬০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আনা হচ্ছে। এর ফলে এলএনজি সরবরাহ বাড়ছে।
জানতে চাইলে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামান বলেন, ‘মোট তিনটি লাইন হচ্ছে। মহেশখালী-আনোয়ারা প্যারালাল লাইন, আরেকটি চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ এবং জিরো পয়েন্ট থেকে মহেশখালী সিটি এমএস সাত কিলোমিটার পাইপলাইন। এই তিনটি লাইনের কাজ শেষ হবে ১৫ ফেব্রæয়ারির মধ্যে।’
তিনি জানান, ‘পাইপলাইনগুলোর কাজ শেষ হলে দু’টি এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট) থেকে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা যাবে। তবে, কারিগরি কিছু সমস্যার কারণে পুরোটা আমরা এখনই দিতে পারবো কিনা তা বলা যাচ্ছে না। এতে গ্যাস সরবরাহ অনেক বেড়ে যাবে।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
প্রতিদিন একটি ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি টার্মিনালের ভাড়া দিতে হয় এক লাখ ৫৯ হাজার ডলার। এরসঙ্গে পরিচালন এবং সংরক্ষণ ব্যয় রয়েছে দৈনিক ৪৫ হাজার ৮১৪ ডলার। আর পোর্ট চার্জ বা বন্দরের ব্যয় রয়েছে প্রতিদিন ৩২ হাজার ডলার।এসব হিসাব যোগ করলে একটি এলএনজি টার্মিনাল ব্যবহার হোক বা না হোক, এর পেছনে দৈনিক খরচ হয় দুই লাখ ৩৭ হাজার ডলার। এলএনজি সরবরাহ নেওয়া হোক বা না হোক, এই পরিমাণ ব্যয় করতেই হচ্ছে প্রতিদিন। ফলে পুরোদমে এলএনজি এলে ব্যয়ের বিষয়টি যৌক্তিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জিটিসিএল সূত্র জানায়, মহেশখালীর জিরো পয়েন্ট (কলাদিয়াচর, সমুদ্র থেকে উঠে যেখানে পাইপলাইন যুক্ত হয়েছে) থেকে সিটি এমএস (ধলঘাট পাড়ায় অবস্থিত মিটারিং স্টেশন) পাইপলাইনটি হচ্ছে ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের ৭ কিলোমিটার লম্বা। এই পাইপলাইনটি যুক্ত হবে মহেশখালী থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত তৈরি হতে থাকা পাইপলাইনের সঙ্গে। পরের পাইপলাইনটি হবে ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের ৭৯ কিলোমিটার।
অন্যদিকে, ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের ১৮১ কিলোমিটার আরও একটি পাইপলাইন করছে জিটিসিএল। এটি হবে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট থেকে কুমিল্লার বাখরাবাদ পর্যন্ত। এই লাইনটি হবে বর্তমানে ২৪ ইঞ্চি ব্যাসের বাখরাবাদ থেকে চট্টগ্রাম পাইপলাইনের সমান্তরাল।
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে প্রথম এলএনজি আসে বাংলাদেশে। এলএনজি সরবরাহ শুরু করে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। এরপর গত বছরের মে মাস থেকে সামিটের এলএনজি টার্মিনাল চালু হয়। এই দুই টার্মিনালের মাধ্যমে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের কথা থাকলেও পাইপলাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় এখন গড়ে ৫৬০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে পাইপলাইনগুলোর কাজ শেষ হলে পূর্ণমাত্রায় অর্থাৎ এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে বলে আশা করছে জিটিসিএল।
প্রসঙ্গত, প্রথমে জিটিসিএল প্রথম ধাপে মহেশখালী দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৯১ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে। এছাড়া, চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের ৩০ কিলোমিটার আরও একটি পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়। প্রথম পাইপলাইনটির সরবরাহ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। একইসঙ্গে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির বিষয়টি পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করলে অতিরিক্ত ব্যয় এবং সময়ের অপচয় করতে হতো না বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।