এরদোগানের ব্যাপারে সুর নরম স্কট মরিসনের

30

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিবেচনা করতে বাধ্য হবেন- এমন হুঁশিয়ার দেয়ার পর সুর নরম করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। বলছেন আঙ্কারার সঙ্গে ‘সম্পর্ক উন্নয়নে’ কাজ করছে তার দেশ। গত সোমবার তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কানাক্কাল প্রদেশে তুর্কি সেনাদের হাতে ব্রিটিশ সেনাদের পরাজয়ের বার্ষিকী স্মরণে আয়োজিত এক সমাবেশে এরদোগান বলেছিলেন, ক্রাইস্টচার্চের মতো তুরস্কে কেউ হামলা করতে আসলে তাকে কফিন নিয়ে ফেরত যেতে হবে, এ ধরনের ঘটনা আবার ঘটালে গ্যারিপলির পূর্বপুরুষদের মতো তাকেও কফিনে উঠতে হবে। ১৯১৫ সালের তুর্কি সেনাদের সঙ্গে ব্রিটিশ সেনাদের যুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সেনারাও অংশ নিয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুর্কি বাহিনীর সঙ্গে সমুদ্র তীরবর্তী শহরটিতে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আট হাজারের বেশি অস্ট্রেলীয় সৈন্য প্রাণ হারায়।
এরদোগানের এমন কঠোর বক্তব্যে ভীষণ ক্ষুদ্ধ হয় অস্ট্রেলিয়া। এমনকি দেশটিতে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে তলবও করা হয়। ক্যানবেরায় নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূত কোরহান কারাকোচকে তলব করে মরিসন বলেছিলেন, ‘তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান যে মন্তব্য করেছেন আমি তাকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য অত্যন্ত আক্রমণাত্মক মনে করছি। এরদোগানের দেয়া বক্তব্যকে ‘হঠকারী’ ও ‘তীব্র আক্রমণাত্মক’ আখ্যায়িতও করেন স্কট মরিসন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান বলছে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের প্রতিবাদের মুখে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছে তুরস্ক। মঙ্গলবার তুরস্কের জঙ্গুলাডাক জেলায় এক নির্বাচনী জনসভায় এরদোগান বলেছিলেন, ক্রাইস্টচার্চের ভয়াবহ এ হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত হামলা। হামলাকারী দু’বার তুরস্ক এসে ৪৬ দিন অবস্থান করেছিল। তার আক্রমণের শিকার মুসলমানরা হলেও মূল টার্গেট তুরস্ক এবং ইউরোপে বসবাসকারী তুর্কি জনগোষ্ঠী। তবে কেউ যদি তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে হামলার চেষ্টা করে তাহলে হামলাকারীদের কফিন ফেরত পাঠানো হবে।
বর্বরোচিত এ হামলার বিচার যদি নিউজিল্যান্ড সরকার সঠিকভাবে করতে না পারে, তাহলে তুরস্ক এর বিচার করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এরদোগান। কিন্তু পরের দিন অবশ্য নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসাও করেছেন। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডার্নের কাছ থেকে ইউরোপীয় নেতাদের সাহস, নেতৃত্ব ও আন্তরিকতা শেখার আহব্বান জানান এরদোগান।