এবার ১৮ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে

30

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আগামী নতুন মেয়রকে আশ^স্ত করে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, এ বছর যেভাবে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে, আগামীতেও সেই ধারায় জিমনেসিয়ামসহ আশেপাশের এলাকা নিয়ে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একশে উপলক্ষে মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত চসিক আয়োজিত এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ ও নাগরিক সমাজ, মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে বিশদিন ব্যাপি বইমেলার সমাপনি দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক নাজমুল হক ডিউকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজম, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবিদা আজাদসহ লেখক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বইমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া।
মেয়র আরো বলেন, আগামী ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে বিজয়ী মেয়রই আগামী বছর বইমেলা আয়োজনের দায়িত্ব পালন করবে। বিগত এবং এ বছর বিনা ফি-তে জিমনেশিয়ামসহ আশপাশের এলাকাকে বইমেলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। আগামী বছরগুলোতে এই মেলা আয়োজনের জন্য চসিক সিজেকেএস এর সহযোগিতা চাইলে বিনা ফি-তে বইমেলা আয়োজনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। তিনি বলেন, দায়বদ্ধতা থেকে এই দায়িত্ব পালন করা হবে। এতে কোনো বিনিময় থাকবে না। এই বইমেলা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সবসময় আমার সহযোগিতার হাত উন্মুক্ত থাকবে। সিটি মেয়র বলেন, বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে ৭০ লাখের বেশি মানুষের এ শহর। বইমেলার অভাব ছিল। বিক্ষিপ্ত বইমেলা হতো। চসিক সস্মিলিত বই মেলার আয়োজন করছে। যান্ত্রিকতা যুগ চলছে। মঙ্গলে মানুষবিহীন যান পাঠাচ্ছে। বর্তমান প্রযুক্তির উৎকর্ষের পাশাপাশি মানুষ যন্ত্রে রুপান্তরিত হচ্ছে। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। মানুষ যাতে মানুষ থাকে, মানবিক গুণাবলি অক্ষুণœ রাখতে বইয়ের বিকল্প নেই। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বই না দিয়ে স্মার্ট ফোন হাতে তুলে দেন। স্মার্ট ফ্যামিলি দেখানোর জন্য বার বছরের সন্তানের হাতে স্মার্ট ফোন তুলে দিচ্ছে। আজকের পৃথিবীর বাস্তবতায় মানবিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। মেয়র এই বইমেলার সার্বিক সহয়োগিতার জন্য সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চসিক প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা সিজেকেএস এর সকল কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সিজেকেএসের সার্বিক সহযোগিতা না পেলে এত বড় পরিসরে বইমেলা আয়োজন সম্ভব হতো না। এই বই মেলা অয়োজন হওয়ায় চট্টগ্রামের বইপ্রেমি মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এই মেলায় এ বছর ১৮ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন শ্রেষ্ঠ প্রকাশক ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু কিশোরদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন। এবারের বই মেলায় সেরা স্টলের মধ্যে প্রথম অক্ষরবৃত্ত, দ্বিতীয় কুঁড়েঘর ও যৌথভাবে তৃতীয় চন্দ্রবিন্দু ও পেন্সিলকে পুরস্কার তুলে দেন সিটি মেয়র।