এফআর টাওয়ার উৎসুক জনতা বাড়াল দুর্গতি

72

এরা কেউ মঙ্গল গ্রহ থেকে আসেনি। অনেকগুলো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। তারা বনানীর এফ আর টাওয়ারের আগুন দেখতে গিয়েছিলো। পোড়া মানুষগুলোর আর্তনাদ দেখে সহানুভূতি দেখতে গিয়েছিলো। এরা কেউ মঙ্গলগ্রহ থেকে এলিয়েন আসেনি, আমাদেরই কেউ না কেউ, কারো না কারো স্বজন। এদের আবেগ অনুভূতি এত্তো এত্তো বেশি ছিল যে, এরা কেউ একবারও ভাবেনি, আগুনে পোড়া মানুষগুলোকে বাঁচাতে ফায়ার সার্ভিস কিংবা অন্য সাহায্যকারী সংস্থাগুলো কিভাবে এই রাস্তা দিয়ে আসবে।
ঢাকায় কিছু ঘটলেই মুহূর্তে জমে যায় মানুষ। অগ্নিকান্ডেও ব্যতিক্রম নয়। গতকাল যেমন আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে এফ আর টাওয়ারের আশপাশে শতসহ¯্র মানুষের ভিড়। অগ্নিনির্বাপণে সহায়তার বদলে তারা ব্যস্ত মুঠোফোনে আগুন বা আক্রান্ত মানুষের আর্তনাদের ছবি তুলতে কিংবা ভিডিও করতে। জনতার এই ভিড় অগ্নিনির্বাপণে কত বড় বাধা, সেটি আগুন নিয়ন্ত্রণে যুক্ত মানুষেরাই জানেন। অহেতুক মানুষের এই ভিড় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হচ্ছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ভবনের নিচে জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিস ইউনিট যেতে পারছে না ঠিক সময়ে।

দূর থেকে পানি দিতে হয়েছে। একদিকে আগুনে গ্লাস ভেঙে পড়ছে। ভেতরের মানুষগুলো বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন। কেউ কেউ লাফ দেওয়ার চেষ্টা করছেন ৯-১০-১১ তলা থেকে। আর অন্যদিকে সবাই মোবাইল নিয়ে তৈরি। কে কার চেয়ে ভালো অ্যাঙ্গেলে ফুটেজ নিতে পারে, সেই প্রতিযোগিতা। যেখানে সবার পানি নিয়ে সাহায্য করার কথা, তারা সবাই দাঁড়িয়ে ভিডিও করছে। দায়িত্বটা কি শুধুই প্রশাসন বা দায়িত্বরত বাহিনীর? নাগরিক হিসেবে আমাদের মধ্য থেকে মানবতা কি হারিয়ে যাচ্ছে?