একুশের শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ

91

যথাযথ মর্যাদায় মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। একুশের শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে মানুষ। দিবসটি পালনে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নামে মানুষের ঢল।
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নামে। এরপর ভোর থেকে আবারও শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তা চলে দুপুরে গড়িয়ে বিকাল পর্যন্ত।
দেখা যায়, একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টার আগে থেকেই পুষ্পস্তবক নিয়ে মানুষ আসা শুরু করে। নারী-পুরুষ, শিশু, শ্রেণি-পেশা, রাজনীতি ছিল না কোনো ভেদাভেদ। সবাই সারি বেঁধে গিয়েছিলেন শহিদ মিনারে। কারও কণ্ঠে একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’। আবার কারও কণ্ঠে স্লোগান। কারও হাতে ব্যানার, কেউ বা নিয়েছিলেন লাল-সবুজের পতাকা, ভাষার জন্য আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে পতাকা পেয়েছে বাঙালি। রাত ১২টা এক মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহানগর পুলিশের একটি দল বিউগলের সুর ও সশস্ত্র সালাম জানায় বীর শহীদদের।
এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভাষা শহীদদের। এরপর মহানগর আওয়ামী লীগ, সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, মহানগর পুলিশ, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রেঞ্জ পুলিশ, জেলা পুলিশ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় শহীদ মিনারে।
বৃহস্পতিবার ভোর শুরুর আগ থেকেই আবারো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের আনাগোণা শুরু হয়। এক পর্যায়ে প্রভাতফেরির দীর্ঘ সারি শহীদ মিনারের আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা ছাড়িয়ে যায়। ভাষার জন্য জীবনদানের দিনটি পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। তাই শুধু বাংলাদেশি নন, চট্টগ্রামে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদেরও দেখা গেছে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জীও গিয়েছিলেন শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর এর পাদদেশে দাঁড়িয়ে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগঠনটির শিল্পীরা। প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, বোধন আবৃত্তি পরিষদও শহিদ মিনারে ফুল দিয়েছে। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের নেতারা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এদিকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি কবিতা উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনে বন্দরনগরীতে মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে।