একপক্ষের ধর্মঘটের ডাক আরেকপক্ষের প্রত্যাখ্যান

69

পরিবহন মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত ও নানামুখি হয়রানির অভিযোগ এনে ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদ অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
অপরদিকে এ দাবি অযৌক্তিক ও বেআইনি বলে ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম বাস মিনিবাস হিউম্যান হলার মালিক সমিতি।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদ ও চট্টগ্রাম বাস মিনিবাস হিউম্যান হলার মালিক সমিতির পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সড়কে নানা রকম হয়রানি হওয়ায় পরিবহন মালিকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কোথাও আইনের তোয়াক্কা নেই। বিআরটিএ’তে কাগজপত্র হালনাগাদ করতে গেলে হয়রানি, সড়কে বিআরটিএ’র ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের হয়রানিতে পরিবহন মালিকরা অতিষ্ঠ। এখন কোন উপায় না পেয়ে আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে। পরিবহন মালিকরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোন সাড়া মিলেনি। তাই আমরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিচ্ছি। এর আগে গত বুধবার দুপুরে নগরীর মোটেল সৈকতের সম্মেলন কক্ষে আমরা একটা সংবাদ সম্মেলন করি। এরপর সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়। তখন ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এরপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো চাঁদাবাজরা প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে আমাদের প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছে। তাই আমরা ঘরে বসে থাকতে পারিনা। আমাদের দাবি মানা না হলে রবিবার ভোর ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণ ও পণ্য পরিবহন বন্ধ রেখে চট্টগ্রাম বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হবে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বাস মিনিবাস হিউম্যান হলার মালিক সমিতির দাবি, তথাকথিত সংগঠনটি যে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেছে তাদের সকল দাবিই অযৌক্তিক ও বেআইনি। প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের ছাত্র-ছাত্রী, পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের জনগণের দীর্ঘদিনের চাহিদা ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহনের নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা দূর করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য নিরলস কাজ শুরু করেছেন ঠিক তখনি একটি অশুভ শক্তি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পরিবহনের বিভিন্ন জরিমানার বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে পরিবহন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদেরকে বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে সংশয়ের মধ্যে রেখেছেন। তারা পরিবহন সেক্টরের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে এবং পরিবহন সেক্টরকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ খুঁজছে। আজকে যখন পরিবহনকে নিয়মের মধ্যে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে, এ নিয়মই তাদের কাছে অনিয়ম বলে মনে হচ্ছে, কারণ নিয়ম হলে তো তাদের চাঁদাবাজি ও হালুয়ারুটি বন্ধ হয়ে যাবে। গাড়ির মালিকরা যদি গাড়ির কাগজপত্র তৈরি করে, তাহলে চালকেরা মালিকদের নিকট হতে পুলিশের নামে যে টাকা হাতিয়ে নিতো তা আর সম্ভব হবেনা। বর্তমান সময়ে দেশের স্থিতিশীল পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল করতে চায়, পরিবহন সেক্টরে বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার অজুহাতে তুলে যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, সড়ক মহাসড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের সকল কর্মকর্তার প্রতি আহব্বান জানাচ্ছি এবং আমরা তাদের আহুত ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করছি।