একটি লেবু ২৫ টাকা!

67

নগরীর অভিজাত এলাকা খুলশীতে সুপারশপ বাস্কেটে লেবু বিক্রি হচ্ছে একটি ২৫ টাকা করে। খোলা বাজারে একই লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা। লেবু খেলে করোনা ভাইরাস থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি মেলে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর লেবুর দাম বাড়তে শুরু করে। চাহিদার তুলনায় লেবুর যোগান না থাকায় এমন অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।
তারা জানান, নগরীর বেশ কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে লেবুর দেখা মিলেছে অনেক কম। হঠাৎ করে ক্রেতারা বেশি লেবু কেনাতে চরম সংকট তৈরি হয়েছে।
নগরীর ২নং গেটের কর্ণফুলি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা সেলিম জানান, লেবু প্রয়োজনীয় পণ্য। চট্টগ্রামের মানুষ যে পরিমাণ লেবু কিনে, তারই ভিত্তিতে পাইকারী বিক্রেতারা লেবু কিনে এবং খুচরা বাজারে তার সরবরাহ করা হয়। কিন্তু যে মানুষটি একটি বা দুইটির বেশি লেবু কিনেন না, তিনিও লেবু নিয়ে গেছেন দুই ডজন। এভাবে প্রায় সবাই বেশি করে লেবু নিয়ে গেছে। ফলে বাজারে লেবুর সংকট তৈরি হয়েছে।আর সংকটকে পুঁজি করে বিক্রেতারা লেবুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারপরও মানুষ লেবু কেনা বন্ধ করছে না।
বাজারটি ঘুরে দেখা যায়, ছোট লেবু ১৫ থেকে ২০ টাকা এবং বড়গুলো ২০ থেকে ২৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। একই বাজারে লেবুর দাম নিয়ে ক্রেতা সাইদা চৌধুরীর সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়ান এক বিক্রেতা। পরে বেশি দামেই কিনে নিয়ে গেলেন দুই ডজন লেবু।
এত বেশি লেবু কেন কিনছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তো একলাফে ২৫ টাকাতে উঠছে, কাল থেকে আবার কত টাকা হয় কি জানি? শুধু ২নং গেটের কর্ণফুলী মার্কেট নয়, নগরীর সবকটি কাঁচা বাজারেই লেবুর এমন দামবৃদ্ধির চিত্রের খবর পাওয়া গেছে।
জনা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ ও গ্রæপে পোস্ট হচ্ছে, রং চায়ের সঙ্গে লেবু মিশিয়ে খেলে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি মেলে। এমন খবরে বাজারে লেবুর সংকট তৈরি হয়। বাজারে লেবু বিক্রি হচ্ছে অধিক দামে।
চিকিৎসকরা বলছেন, একটি মাঝারি আকৃতির লেবু থেকে চল্লিশ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি বা এসকরবিক এসিড পাওয়া যায়, যা একজন মানুষের দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট। ভিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে বা ক্ষত হলে দ্রুতগতিতে কোলাজেন কোষ উপাদান তৈরি করে ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে এ ভিটামিন সি। লেবুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাইট্রিক এসিড বিদ্যমান, যা ক্যালসিয়াম নির্গমন হ্রাস করে পাথুরি রোগ প্রতিহত করতে পারে। লেবুর খোসার ভেতরের অংশে ‘রুটিন’ নামের বিশেষ ফ্ল্যাভানয়েড উপাদান আছে, যা শিরা এবং রক্তজালিকার প্রাচীরকে যথেষ্ট শক্তিশালী এবং সুরক্ষা দেয়।