উপকূলে আবারও সক্রিয় জলদস্যুরা

71

দীর্ঘদিন পর আবারও উপকূলে কিছু জলদস্যু ও অপরাধী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা দিনে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে এবং রাতে ইয়াবা ব্যবসা ও দস্যুতাসহ নানা অপরাধ করছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সারাদেশে মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস ও জলদস্যুতার বিষয়ে সরকারের কঠোরনীতির কারণে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী ও জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে পুনর্বাসিত হয়েছে। অনেকে এলাকা ছেড়ে যায় আত্মগোপনে। অনেকে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিল।
সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফ, উখিয়া, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা থানা পুলিশের তালিকার ৭০% অপরাধী আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর নিয়ন্ত্রণের বাইরে ৩০%। তারা নানা অপরাধকর্ম চালাচ্ছে।
তালিকাভুক্ত জলদস্যুদের অধিকাংশ আটক ও আত্মসমর্পণ করলেও সম্প্রতি ১৮-২০ জন জলদস্যু সাগরে এবং উপকূলে ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে সংগঠিত হয়েছে। তাদের অনেকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজী, মাসোহারা আদায় করছে। তাদের মধ্যে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের জুম্মাপাড়ার আসাব উদ্দিনের ছেলে দিদার (৩৮), লেমশীখালীর রাসেল, ধুরুংকাঁচার পারভেজ ও শফি সোহেরের নাম জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহেশখালীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণকারী এক জলদস্যু সর্দার জানান, সম্প্রতি কুতুবদিয়ার উপকূলে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের কানা দিদার, সাহেদ, আবদু সমদ প্রকাশ পিতলা বাদশা, আবুইয়্যা, আবদুল মজিদ, আবদু শুক্কুর, দিদার (সোর্স) ছুট্টো, কৈয়ারবিলের লেডাইয়া, বাদশা, লেমশীখালীর ইসহাক, মানিক, বাঁশখালী ছনুয়ার জাহাঙ্গির আলম, গফুর, আঙ্গুল কাঁটা জব্বার, ভান্ডারী, আকতার, পেকুয়ার রাজাখালী এলাকার জাকির, সেলিম, আরিফ ও নাছির সাগরে জলদস্যুতা করার জন্য গত ৮ ডিসেম্বর রাতে গোপন বৈঠক করেছে সোর্স দিদারের বাড়িতে।
তিনি আরো জানান, তারা সাগরে মাছ লুট করে চট্টগ্রামের ফিশারিঘাট ও বাঁশখালীর শেখেরখীলের মাছ বেপারী জাহাঙ্গির আলম, ইসমাইল, জহির, সেকান্দার ও মৌলভীর নিকট বিক্রি করে। এ বিষয়ে কুতুবদিয়া থানার ওসি মো. দিদারুল ফেরদাউস জানান, গত দুই বছরে অর্ধশত জলদস্যু ও শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। ইদানিং কিছু সন্ত্রাসী এলাকায় আনাঘোনা করছে। খবর নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ এ ব্যাপারে সর্তক আছে। এদিকে গত ৯ ডিসেম্বর কুতুবদিয়া উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির সভা ইউএনও মো. জিয়াউল হক মীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে এসিল্যান্ড সুপ্রভাত চাকমা, ওসি মো. দিদারুল ফেরদাউস, ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ্ছাফা, আকতার হোছাইন, ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, অধ্যক্ষ মো. নুরুচ্ছাফা, কুতুবদিয়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জিগারুন্নেছা, কুতুবদিয়া উপজেলা মৎস্যজীবী ফেডারেশনের সভাপতি আবুল কালাম আযাদসহ উপস্থিত সমাজসেবক, শিক্ষক, সাংবাদিক, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইয়াবা ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, জলদস্যুদের ব্যাপারে সভাকে অবহিত করেন।