উন্নয়ন চিত্রে বদলে যাচ্ছে চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়ন

59

রাঙ্গুনিয়ায় গত ১১ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নেও উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে এলাকার দৃশ্যপট। ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ের ছোঁয়া লেগেছে। এরঅংশ হিসেবে বর্তমানে নদী ভাঙন প্রতিরোধ, সড়ক উন্নয়ন কাজ, কালভার্ট নির্মাণ সহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে চন্দ্রঘোনার প্রতিটি বসতঘর। শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহেই চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২টি ব্রিজ সহ ১৬টি সড়ক উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন হয়েছে। এসব সড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ইদ্রিছ আজগর। এছাড়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরও অন্তত ১০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ। ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর জানান, সারা রাঙ্গুনিয়ায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়ের হাত ধরে উন্নয়নের মহোৎসব চলছে। এর অংশ হিসেবে গত ১১ বছরে চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সম্প্রতি ৫৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের গুমাই বিল চাষী সড়ক এবং ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩শত ফুট দৈর্ঘ্যের কদমতলী ধর্ম্মাংকুর বড়ুয়া পাড়া সড়কের আরসিসি ঢালাই কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একই ভাবে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের চন্দ্রঘোনা হাজী পাড়া সড়কে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬০ মিটার কার্পেটিং এবং বাকী অংশে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ডাবল ব্রিক স্থাপন করা হয়েছে। এভাবে বুইজ্জার দোকান সড়ক, অঞ্জলি মার মাহাল সড়ক, সুফি পাড়া সড়ক, চন্দ্রঘোনা ইউপি সড়ক সহ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে গত ১ সপ্তাহে ১৬টি সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া লালমিয়া সওদাগর ব্রিজ ও চন্দ্রঘোনা সুবেদার বাড়ি সড়কের উপর ব্রিজসহ দুটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। ইউনিয়ন পরিষদের এলজিএসপি ও উপজেলার উন্নয়ন তহবিল এবং এডিপি থেকে এসব সড়কের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে গত এক সপ্তাহে ইউনিয়নে অন্তত ২ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দের কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে তিনি জানান। চলতি সপ্তাহে প্রত্যেক ওয়ার্ডে আরও ৯টি সড়কে সিসি সহ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। এসব সড়কের কাজ বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। অন্যদিকে কর্ণফুলী নদীর ভাঙন প্রতিরোধে চন্দ্রঘোনা পূর্ব হিন্দুপাড়া, শ্যামাপাড়া, দেওয়ানজী হাট, কদমতলী মিনারপাড়া এলাকায় নদী উপকূলে বøক স্থাপন কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এছাড়াও চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম এলাকা সহ ইউনিয়নের প্রতিটা ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো চন্দ্রঘোনার হাজারো মানুষের দাবিকৃত হাশেম খাল ব্রিজ নির্মাণে কার্যাদেশ প্রদান করা হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অযৌক্তিক বাঁধার কারণে তা বন্ধ হয়ে গেছে। এরফলে এতদ এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ আনুমানিক ২০ হাজার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই জনস্বার্থে এ ব্রিজের নির্মাণ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। চন্দ্রঘোনা কদমতলী ধর্ম্মাংকুর বিহারের অধ্যক্ষ দীপংকর থের বলেন, এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে বড়–য়া পাড়া সড়কের কাজ বাস্তবায়ন হওয়ায় এলাকার শত শত মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এসব কাজ বাস্তবায়ন করায় ইউপি চেয়ারম্যান সহ রাঙ্গুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সন্তান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা রয়েছে। চন্দ্রঘোনা শ্যামার পাড়ার পল্লী চিকিৎসক গৌর পদ দাশ বলেন, নির্বাচনের সময় মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয় বলেছিলেন নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্লক স্থাপন করা হবে। তিনি কথা রেখেছেন। এখন বøক স্থাপিত হওয়ায় নদী ভাঙন প্রতিরোধ হয়েছে এবং ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে এলাকার শত পরিবার। এরজন্য ড. হাছান মাহমুদের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা রয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল কান্তি চাকমা বলেন, প্রকল্প অফিসের মাধ্যমে চন্দ্রঘোনায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরমধ্যে দুইটা ব্রিজ নির্মাণে ৩৫ লাখ টাকা ও ৫২ লাখ টাকার বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন কাজ সহ উপজেলা প্রকল্প অফিস থেকে ৮৫ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে এই ইউনিয়নে। উপজেলা প্রকৌশলী দিদারুল আলম বলেন, চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নে চন্দ্রঘোনা ইউপি সড়ক, চন্দ্রঘোনা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, হাজী পাড়া সড়ক সহ প্রায় ৬ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। তবে এরমধ্যে একটি ব্রীজের কাজ বাধার কারণে আটকে আছে। তবে ১০ কোটি টাকার উন্নয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়ের সার্বিক নির্দেশনায় চন্দ্রঘোনায় এলজিএসপি ও উপজেলার উন্নয়ন তহবিল এবং এডিপি থেকে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প কাজ চলমান রয়েছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরও কোটি টাকার উন্নয়নের কাজ।