উদ্যোগ প্রশংসনীয়

85

গত মঙ্গলবার দৈনিক পূর্বদেশে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনে এবার বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্ণফুলী নদীতে ওয়াটার বাস চালু করতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এ ওয়াটার বাস চালু করা হবে সদরঘাট থেকে পতেঙ্গা ১৫নম্বর ঘাট পর্যন্ত। মূলত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সুবিধার্থে ও নগরীকে যানজটমুক্ত করার প্রক্রিয়া থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে পত্রিকা প্রতিবেদনে বলা হয়। আমরা মনে করি, বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা প্রশংসনীয়। নিঃসন্দেহে এর ফল শুধু বিমান যাত্রীরাই ভোগ করবে না, বরং পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে যাতায়াতকারী পর্যটন, এ এলাকায় কর্মরত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আনোয়ারাবাসীরাও পাবেন। তবে এ ওয়াটার বাসের স্থায়িত্ব কতদিন থাকে তা দেখার বিষয়। আমরা জানি, দেশের প্রধান শহর ও রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার জন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শেষ পর্যন্ত বুড়িগঙ্গায় ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করে দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল। একেবারে সদরঘাট থেকে বুড়িগঙ্গা হয়ে টঙ্গী তুরাগ তীর পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছিল এ ওয়াটার বাসের। শেষ পর্যন্ত এ বাস বেশিদিন ঠিকে নি। যাত্রীরা যানজটের দুঃসহ যন্ত্রনা ভোগ করবে অথচ ওয়াটার বাসে চড়ে নিরাপদে বাড়ি বা অফিসে ফিরবে না- মনে হয় যেন পন করেছে ঢাকাবাসী। ঢাকার এবার বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে এবার ওয়াটার বাস চালু হচ্ছে। আমরা মনে করি, চট্টগ্রামের মানুষ নদীর স্বচ্ছ জলে গা বাসিয়ে চলতে পছন্দ করে। সাম্পান-মাঝির সাথে চট্টগ্রামের মানুষের আবহমান প্রেম কর্ণফুলের মতই হারিয়ে যেতে বসেছে। নৌকা বা সাম্পান না হোক ওয়াটার বাস আবারো কর্ণফুলীকে জাগ্রত করবে। মানুষ দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার যানজট ও দূষণমুক্ত থেকে আধুনিক বাহন নৌপথে পাড়ি দিবে সদরঘাট-পতেঙ্গা। আমরা মনে করি, এ পথ সঠিকভাবে ব্যবহার হলে বিমানযাত্রীসহ এ এলাকার সাধারণ যাত্রীরা সঠিক সময়ে কোনরকম বিড়ম্বনায় না পড়ে গন্তব্যে পৌছতে সক্ষম হবে। তবে পূর্বদেশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ওয়াটার বাস যদিও সদরঘাট হতে পতেঙ্গার দূরত্ব কমাবে তবে সদরঘাট থেকে নিউমার্কেট বা অন্য কোন স্থানে যেতে সড়ক পথের যে হাল তাতে বন্দর কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগ কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক হতে পারে। এ বিষয়টির প্রতিও বন্দরের মনোযোগ দেয়া জরুরি। নিউ মার্কেট হয়ে সদরঘাট সড়কটি গিয়ে মিশেছে বারিকবিল্ডিং বিমানবন্দর সড়কের সাথে। মূলত এ সড়কটির অধিকাংশ বাহন ট্রাক ও কার্গোবাহী লরিগুলোর গন্তব্য বন্দরের দিকে। সুতরাং নৌ রোড সংস্কারের সাথে সাথে বন্দর কর্তৃপক্ষ এ সড়ক পথটিও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে সংস্কার ও যানজট মুক্ত করার উদ্যোগ নিতে পারে। আমরা, বন্দর কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগের সফলতা কামনা করি।