উত্তর কাট্টলীতে তিন মাস ধরে ওয়াসার পানি নেই!

45

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ঘরবন্দী হয়ে থাকা নগরের উত্তর কাট্টলীর হাজারো পরিবার পানি সংকটে পড়েছেন। গত তিন মাস ধরে ওয়াসার পানি পাচ্ছেন না এসব পরিবার। স্বাভাবিক সময়ে এসব পরিবার পানি না পেলেও ঘরবন্দী অবস্থায় তাদের পড়তে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগে। স্থানীয়রা এই বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানালেও কোনো সমাধান হয়নি। স্থানীয় পুকুর থেকে বাল্টি-কলসে করে পানি নিয়ে কোনোমতে নিত্যপ্রয়োজন মেটালেও করোনা পরিস্থিতি সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। এছাড়াও পুকুরগুলো থেকে পানি নিতেও নিষেধ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকার লোকজন মারাত্মক পানি সংকটে ভুগছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য চট্টগ্রাম ওয়াসা দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের কথা জানিয়েছে। অন্যদিকে নগরীর কদমতলী এলাকায় ঘোলাপানি সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে ওয়াসার বিরুদ্ধে। কয়েক শতাধিক পরিবার ঘোলাপানি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর কাট্টলীর বিশ্বাসপাড়ার সোলেমান চৌধুরী বাড়ি, হাজী দরবেশ আলীর বাড়ি, কুতুববাড়ির মদিনুল্লাহ মিয়াজির বাড়ি, জাকের আলী সওদাগর বাড়ি, চৌধুরীপাড়া, আব্দুল লতিফ সড়ক সংলগ্ন বাড়িসমূহ, মাদ্রাসা সড়ক, মুকিম তালুকদার বাড়ি, মোবারক আলী তালুকদার বাড়ি, আজিম তালুকদার বাড়ি, ইউনুস সওদাগর বাড়ি, অলি মিয়া মিস্ত্রির বাড়ি, আলী চাঁদ বাড়ি, ঈশান বলীর বাড়ি, সেনবাড়ি, কমিউনিটি সেন্টারের পশ্চিমপাশে অবস্থিত বাড়িগুলোসহ অনেকবাড়িতে ওয়াসার পানি আসছে না দীর্ঘ ৩ মাস যাবত। এসব এলাকার হাজার হাজার পরিবার ওয়াসার পানির উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে স্থানীয় পুকুরগুলো থেকেও আর পানি নেয়া যাচ্ছে না। এসব এলাকার অধিবাসীদের অভিযোগ, লাইনম্যান পানির প্রেসার কমিয়ে রাখার কারণে তাদের কাছে পানি যাচ্ছে না। ওয়াসার কাছে বারবার অভিযোগ করার পরও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প ও মদুনাঘাট পানি সরবরাহ প্রকল্প উৎপাদনে আসার পর থেকে পানির কোনো সংকট নেই। অথচ উত্তর কাট্টলীর এ অংশে কৃত্রিম পানির সংকট সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। করোনার দুঃসময়ে ঘরবন্দী অবস্থায় সবার অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে।
এদিকে নগরীর কদমতলী এলাকায় ঘোলাপানি সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। ঘোলা, দুর্ঘন্ধময় পানি যেমন সরবরাহ করা হচ্ছে তেমনি অনিয়মিত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে ওই এলাকায়। তারা জানান, কদমতলী এলাকায় এমনিতেই পানি থাকে না। তার ওপর ময়লাযুক্ত ব্যবহার অযোগ্য পানি সরবরাহ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, পুরো কদমতলী এলাকাজুড়ে ঘোলা ও ময়লাযুক্ত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। আমাদের অনিয়মিত পানি সরবরাহ করা হয়। একেক সময় একেক ধরনের পানি আসে। আবার পানি ধরে রাখলে কিছুক্ষণ পর পানির রং পরিবর্তন হয়ে যায়। অনেক দিন থেকে আমরা এ সমস্যায় আছি।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, কাট্টলীর বেশকিছু এলাকায় পানির সমস্যা আছে। এ সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। একদম শেষ প্রান্তে হওয়াতে তারা পানি পাচ্ছেন না। পানির প্রেসার দিলে লাইন ফেটে যাচ্ছে। সমস্যাটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। দু-একদিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করছি।
কদমতলী এলাকায় ঘোলাপানি সম্পর্কে প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, কদমতলী এলাকার এমন সমস্যা নিয়ে কেউ আমাদের কোনো অভিযোগ করেনি। সেখানে ঘোলাপানি হওয়ার কথা নয়। তবে সিটি কলেজ এলাকার ডীপ-টিউবওয়েলের পানি সেখানে সরবরাহ করা হয়। ওই পানি কিছুটা ক্ষার হতে পারে। পানি ধরে রাখলে পরবর্তিতে রং পরিবর্তন হতে পারে। এই পানি কোনো সমস্যা করবে না।