উচ্চতর মানুষের নাম দিয়েছি আলোকিত মানুষ : আবু সায়ীদ

112

‘পৃথিবীতে দুই রকমের মানুষ রয়েছে- উচ্চতর মানুষ আর নিম্নতর মানুষ। আমরা উচ্চতর মানুষের নাম দিয়েছি আলোকিত মানুষ। এই আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য শিক্ষার্থীদের বেশি বেশি জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সে জন্য অনেক বেশি বই পড়তে হবে। অজানাকে জেনে বুকে ধারণ করতে হবে।
গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পরিচালিত দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রমের আওতায় নিয়মিতভাবে বই পড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী উৎসবে অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
দিনব্যাপি দুই পর্বের বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসবে ২০১৮ সালে বই পড়া মোট ৫ হাজার ২১০ শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ফুলের মালা কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। বর্ণাঢ্য এই উৎসবে নগরীর ৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ হাজার ২১০ শিক্ষার্থীকে গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় পুরস্কার প্রদান করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। উৎসবের দুইপর্বে ৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ হাজার ২১০ শিক্ষার্থীকে স্বাগত পুরস্কার, শুভেচ্ছা পুরস্কার, অভিনন্দন পুরস্কার ও সেরাপাঠক পুরস্কার প্রদান করা হয়। সকালে ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৬০৬ এবং দ্বিতীয়পর্বে ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৬০৪ শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দেয়া হয়। লটারির মাধ্যমে প্রতি ১০ জন সেরা পাঠক পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্য থেকে ১ জন করে মোট ৬ জনকে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেয়া হয়। এছাড়াও লটারির মাধ্যমে প্রতিপর্বে ২ জন করে মোট ৪ জন অভিভাবককেও বিশেষ পুরস্কার হিসেবে বই প্রদান করা হয়।
উৎসবে আরো উপস্থিত ছিলেন শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম, চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সাহেদুল কবির চৌধুরী, গ্রামীণফোনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের রিজিওনাল হেড অব অপারেশনস ফিরোজ উদ্দিন, চট্টগ্রাম লেখক-সাহিত্যিকদের সংগঠন চট্টগ্রাম একাডেমির মহাপরিচালক অরুন শীল, চট্টগ্রাম মহানগরের সংগঠক ও অধ্যাপক আল আলীম প্রমুখ।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আমাদের সন্তানেরা আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে আলোকিত মানুষ হতে পারে, সেজন্য সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি বেশি বেশি বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কারণ বই পড়ার মাধ্যমেই মানুষের ভেতরে সত্যিকারের মূল্যবোধ জাগ্রত হয়। আর মূল্যবোধই পারে আলোকিত মানুষ গড়ে তুলতে।
শিশু-সাহিত্যিক আলী ইমাম বলেন, বই পড়ে তুমি যেমন কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে মহাবিশ্বের খবর জানতে পারবে, সমুদ্রের তলদেশের খবরও জানতে পারবে। সেজন্য বেশি বেশি বই পড়তে হবে।
গ্রামীণফোনের ফিরোজ উদ্দিন বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কার্যক্রমের সাথে গ্রামীণফোন যুক্ত থাকতে পেরে আমরা গর্বিত। বই হচ্ছে জ্ঞানগর্ভ। ভালো এবং বেশি বেশি বই পড়তে হবে; আর সে অনুযায়ী জীবন গড়তে পারলে সফলতা নিশ্চিত। পাঠকদের জন্য তাই চমৎকার সব বইয়ের একটি ই-লাইব্রেরি তৈরি করেছে গ্রামীণফোন এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। এখান থেকে আগ্রহী পাঠকেরা পছন্দের বই পড়তে পারবেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে চট্টগ্রাম মহানগরের সংগঠক অধ্যাপক আল আলীম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। উৎসব সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন। দিনব্যাপি উৎসবের সহযোগিতায় ছিল গ্রামীণফোন লিমিটেড।