উখিয়া-টেকনাফ বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গাসহ ৩ জন নিহত

32

কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ২ রোহিঙ্গাসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভী বাজারের দুই নম্বর স্লুইচ গেট সংলগ্ন নাফনদের তীরে ২ জন এবং উখিয়ার কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজুখাল যৌথ চেকপোষ্টের কাছে পৃথক এই ঘটনা ঘটে। বর্ডারগার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দাবি, টেকনাফে নিহত দেলোয়ার হোসেন দিলুর (৩০) বাড়ি হোয়াইক্যং নয়াবাজার সাতঘরিয়া পাড়ায়। আর নুরুল ইসলাম (২৭) কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের দুই নম্বর বাসিন্দা। তারা দু’জনই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। অন্যদিকে উখিয়ায় নিহত উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-৭ ব্লক-ই-১ এর আশ্রিত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. আইয়ুবও (২২) মাদক ব্যবসায়ী। সে মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডু থানার বাসিন্দা। টেকনাফের ঘটনাস্থল থেকে ২০ হাজার পিস ইয়াবা, দু’টি দেশীয় অস্ত্র, চার রাউন্ড তাজা কার্তুজ, দু’টি কিরিচ এবং উখিয়ার ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশে তৈরি বন্দুক, ২ রাউন্ড খালি কার্তুজ এবং ২৯৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় বলে বিজিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিজিবি-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় চালান প্রবেশের খবরে বিজিবির একটি দল টেকনাফের মৌলভী বাজারের দুই নম্বর স্লুইচ গেট সংলগ্ন নাফনদীর তীরে অবস্থা নেয়। এসময় কয়েকজন পাচারকারী ওই এলাকায় প্রবেশ করে চার-পাঁচ জন দেশীয় ইয়াবা ব্যবসায়ীর সঙ্গে মিলিত হয়ে ইয়াবার লেনদেন করছিল। এসময় তারা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি করে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ওই দু’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার কক্সবাজারে নিতে বলেন। কক্সবাজার নেওয়ার পথে তারা মারা যান। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বিজিবির চার সদস্য আহত হয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অন্যদিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজুখাল যৌথ চেকপোস্টের একটি টহল দল সোমবার ভোরে উখিয়ার জালিয়া পালং ইউনিয়নের রূপপতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে চোরাচালান বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে কক্সবাজারগামী ১টি মোটর সাইকেলকে চ্যালেঞ্জ করে। এসময় মোটরসাইকেলে থাকা আরোহীরা বিজিবি টহল দলকে লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। তখন বিজিবিও জান-মাল, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষার্থে গুলি ছুড়ে। উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে এক ইয়াবা ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি’র অতিরিক্ত পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন মজুমদার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির সদস্যরা গাড়ির গতিরোধ করে তল্লাশি করতে চাইলে ইয়াবা বহণকারীরা গুলি বর্ষণ করতে শুরু করে। আমরাও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাই। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ১০-১২ মিনিট গুলি বিনিময় হয়। পরে স্থানীয় লোকজন গোলাগুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলের দিকে আসতে শুরু করলে স্থানীয় লোকজনের জান-মালের ক্ষতি সাধন রোধকল্পে বিজিবির টহল দল গুলিবর্ষণ বন্ধ করে। এক পর্যায়ে অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। বিজিবি টহল দল ইনানী পুলিশ ফাঁড়িকে ঘটনাটি দ্রæত অবগত করলে পুলিশ ফাঁড়ির একটি টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে উখিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল মনসুর জানান, লাশটি ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।