উখিয়ায় প্রবাসীর বাড়িতে ৪ খুনের ঘটনায় মামলা

34

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্বরত্না গ্রামে কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার পরিবারের চার সদস্যকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ময়না তদন্ত শেষে তাদের অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, রোকেনের শ্বশুর শশাঙ্ক বড়ুয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করে বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে এ মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোকেনদের চার ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই রবিসন বড়ুয়ার ইঞ্জিন ওয়ার্কশপের দোকান আছে। মেজ ভাই দীপু বড়ুয়া এক সময় স্থানীয় কোটবাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। তবে বছর দেড়েক ধরে তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামে। সেজ ভাই শিপু বড়ুয়া কোটবাজারে একটি ফার্ণিচারের দোকান চালান। আর সবার ছোট রোকেন গত দশ বছর ধরে কুয়েতে থাকেন। মাস ছয়েক আগে দেশে এসে বেশ কিছুদিন থেকে গতমাসে আবার কুয়েতে ফিরে যান।
পূর্ব রত্নাপালংয়ে তার বাড়ির পাশেই আলাদা দু’টি বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন তার দুই ভাই দীপু ও শিপু। শিপু বড়ুয়ার স্ত্রী মিনু বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ে সনি মাঝে মধ্যেই রোকেনের বাড়িতে দাদীর সঙ্গে থাকত। বুধবার রাতেও সে ওই বাড়িতে ছিল। মিলা সন্ধ্যার দিকে কোটবাজার স্টেশনে গিয়েছিল ঘরের বাজার করতে। সাড়ে ৭ টার দিকে ও বাসায় চলে আসে। রাতে খেয়ে চারজন ঘুমিয়ে পড়েছিল বলেই আমরা জানি। আর কেউ ওই বাসায় থাকে না।
সকালে ওই বাসায় কারও সাড়া না পেয়ে খোঁজ নিতে যান মিনু বড়ুয়ার বড় জা। দরজা ধাক্কানোর পর কেউ সাড়া না দেওয়ায় তিনি শাশুড়ির ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেন। শাশুড়িকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে তিনি চিৎকার দিলে রবিসন ছুটে যান।
এদিকে পুলিশের পাশাপাশি পিআইবি ও সিআইডির বিশেষজ্ঞ দল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানান। ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানালেও তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি তিনি।
এসপি বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। হত্যা ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি ও পরিবারের ঘনিষ্ট কেউ জড়িত থাকতে পারে। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানান তিনি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার দুর্বৃত্তের হাতে নিহত ৪ জনের ময়না তদন্তেরর পর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এসে সুত্রপাঠ করা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে মধ্যরত্না ভাবনা কেন্দ্র মহাশশ্মানে অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এতে বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের কয়েক হাজার লোক ও ভান্তে উপস্থিত ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ফয়েজ আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।