উখিয়ায় অস্ত্র ঠেকিয়ে দোকান লুট করলো সন্ত্রাসীরা

42

উখিয়ার ক্রাইম জোনখ্যাত পালংখালীতে অস্ত্রধারী সন্ত্রসীদের চাঁদাবাজি, মারধর, হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সেখানকার কয়েক শতাধিক ব্যবসায়ী। তাদের অভিযোগ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রায় প্রতিদিন কতিপয় রাজনৈতি স্থানীয় নেতাদের ছত্রচ্ছায়া কোনো না কোনো দোকানে, মার্কেটে হামলা চালিয়ে মালামাল, নগদ অর্থ লুট, ব্যবসায়ীদের মারধর করে আসছে। ভুক্তভোগী অনেক ব্যবসায়ী নিরাপত্তার অভাবে ইতোমধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। এই অবস্থা চলতে থাকলে এখানকার ৫ শতাধিক ব্যবসায়ী আন্দোলনে নামবেন বলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে বারটার দিকে পালংখালী বাজারে হাজী হোছেন আলী মার্কেটে একটি ছাপাখানায় হামলা চালিয়ে দোকান ভাঙচুর করে নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা। এসময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ছাপাখানা মালিক আবদুস সাত্তার (২৮) কে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে হাজী হোছন আলী মার্কেটের মালিক মো. আলম (২৫) এগিয়ে আসলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাকেসহ অন্যদেরও প্রকাশ্যে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার ছাপাখানা ও মার্কেট মালিক উখিয়া থানায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় পূর্ব ফারির বি গ্রামের করাচী পাড়ার আয়ুবুল ইসলামের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (২৫), সাইফুল ইসলাম (৩২), ভাড়াটে সন্ত্রাসী চকরিয়ার খুটাখালীর মো. কাশেম (৩০) সহ সশস্ত্র ৭-৮ জন সন্ত্রাসী বেশ কয়েকদিন ধরে এই এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করে হুমকি দিয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার দোকান বন্ধ করার সময় ঐ সন্ত্রাসীরা এসে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই মারধর করে ভাঙচুর চালায় এবং নগদ ত্রিশ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে।
মার্কেটের মালিক মো. আলম জানান, এখানে আওয়ামী লীগের অফিসের জন্য আমার বাবা মরহুম হাজী হোছেন আলী এক শতক জমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। মার্কেটের মালিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ করায় স্থানীয় নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার বাবার গড়া ৮২ টি দোকানের মার্কেটটি বন্ধ করে জবর দখলে নিতে চায়।
যেখানে আওয়ামী লীগ অফিস রয়েছে সেটি হাজী হোছেন আলী দান করেছেন বলে পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মঞ্জুরও স্বীকার করেন।
পার্শ্ববর্তী অন্য একটি মার্কেটের মালিক রেজাউল করিম রুবেলও একই অভিযোগ করে বলেন, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে আমার ৩৬ টি দোকানের ব্যবসায়ীরা দোকান ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন।
পালংখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সাবেক সেক্রেটারি কামাল উদ্দিনসহ ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় কতিপয় ক্ষমতাশালী নেতারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয়প্রশ্রয় দেয়ার কারণে চাঁদাবাজ, মাদক পাচার ও সেবনকারী সন্ত্রাসীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। গুঁটিকয়েক সন্ত্রাসীদের কাছে পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা বলেন, নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দিয়ে সন্ত্রাসীদের দমন করতে না পারলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের পালংখালী বাজারে দোকানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছেন এবং এ ব্যাপারে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।