প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনা ও সেনাবাহিনী প্রধানের নেতৃত্বে দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রভাব ও সা¤প্রতিক ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায় ও কর্মহীন হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সেবায় সেনাবাহিনী শুরু থেকেই নিজেদের সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করে মাঠ পর্যায়ের যোদ্ধা হিসাবে নিয়োজিত রয়েছে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে তারা নিজেদের ছুটি ও ঈদের আনন্দ পরিহার পরিবারের প্রিয় মানুষদের কাছে না গিয়ে ছুটে চলেছেন অসহায় মানুষের দ্বারে-দ্বারে।
প্রান্তিক আয়ের মানুষদের জীবনযাত্রাকে সহজ করার লক্ষ্যে সেনা সদস্যদের নিজেদের রেশন বাঁচিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছানোর পাশাপাশি সেনাবাজারের আয়োজন করে।
গতকাল শনিবার ১০ পদাতিক ডিভিশন কর্তৃক কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে বিনামূল্যের এ সেনাবাজারের আয়োজন করা হয়। সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী যেমন চাল, আটা, তৈল, লবণ, ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের তাজা সবজি সেনাবাজারে রাখা হয়।
উল্লেখ্য, প্রত্যন্ত এলাকায় প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে উপযুক্তমূল্যে সবজি ক্রয় করে বাজারে নিয়ে আসা হয়। এবার দুস্থ ও অসহায় ৫০০ পরিবার বিনামূল্যে এ বাজার থেকে সুবিধা গ্রহণ করেন।
এ বাজার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ৬৫ ব্রিগেড এর ব্রিগেড কমান্ডার, রামু সেনানিবাসের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাবৃন্দ ও জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
রামু সেনানিবাসের মিডিয়া সমন্বয়ক ও মুখপাত্র মেজর তানজিলে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার অসহায় ও দুস্থ মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর গৃহীত নানাবিধ কর্মকাÐের ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পূর্ব পাহাড়, লম্বার ঘোনা, শৈলের ডোবা, ফলিয়া পাড়া, রাজা পালং, গুচ্চগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক হত দরিদ্র মানুষদের তালিকা তৈরি করে বিশেষ টোকেন প্রদান করা হয়। উল্লেখিত সেনা বাজারের প্রবেশ পথে সেনাসদস্যদের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল জীবাণুনাশক বুথ ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। সারি সারি টেবিলে পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখা ছিল বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী। অসহায় ব্যক্তিরা জীবানুনাশক টানেলের মধ্যে দিয়ে জীবাণুমুক্ত হয়ে নির্ধারিত সময়ে বাজারে উপস্থিত হয়ে টোকেন দেখিয়ে কোন প্রকার জটিলতা ছাড়াই স্বল্প সময়ের মধ্যে তাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ব্যাগে ভরে বাসায় নিয়ে যান। এ সময় হত দরিদ্র মানুষকে এ দুঃসময়ে বিশেষ মানবিক সহায়তা পেয়ে আনন্দে উচ্ছসিত হতে দেখা যায়। এ ধরনের মানবিক সহায়তার জন্য তারা সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাজার করতে আসা ফলিয়া পাড়ার কুলছুম আক্তার বলেন, করোনার কারণে সব কাজ বন্ধ থাকায় আমরা অত্যন্ত কষ্টের মাঝে আছি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চাল, আটা, লবণ, তেল, আলু, বরবটি, কচুর লতি, কাঁচামরিচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেয়ে আমরা আনন্দিত। সেনাবাহিনীর এ ধরনের কার্যক্রম অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সেনা বাজার পরিচালনা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্যান্য এলাকাতেও এ ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করা হবে।
