ঈদের ছুটিতে পর্যটক কম বান্দরবানে

84

ঈদের টানা ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটক কম আসায় হতাশায় ভুগছেন পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। সাম্প্রতিক বন্যায় বান্দরবানের পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে। ঈদের ছুটি উপলক্ষে বান্দরবানের আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্ট হাউজ এবং গেস্ট হাউজগুলোতে আশানুরূপ বুকিং হয়নি এবার।
অন্যান্য বছরগুলোতে ঈদের দুই সপ্তাহ আগেই সবগুলো হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্টহাউজ এবং গেস্টহাউজগুলো বুকিং হয়ে যায়। কিন্তু এবার তেমনটি ঘটেনি। পর্যটকদের সাড়া না পাওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কারণ পর্যটন শিল্পই পাহাড়ি এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক আয়ের খাত। এ অঞ্চলের এক তৃতীয়াংশ বাঙালি এবং ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়। ফলে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
বান্দরবান জেলায় অসংখ্য ঝিরি-ঝর্ণা, মেঘলার লেক, স্বর্ণ মন্দির, নীলাচল, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, বগালেক, রেমাক্রী, নাফাকুম, বড়পাথরসহ সরকারি-বেসরকারি অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।
নিলাচল, নীলগিরি, মেঘলাসহ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে তেমন পর্যটকের দেখা মেলেনি। অথচ অন্যান্য বছরের এ সময়ে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের ভিড় জমে যায়। গতকাল শুক্রবার বিকালে জেলা শহরের নীলাচল ও মেঘলা পর্যটন স্পটে কিছু পর্যটক দেখা গেছে।
মেঘলার হলিডে ইন রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপক মো. জাহিদ বলেন, এবার ঈদে অনেক পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করেছিলাম। টানা সরকারি বন্ধ থাকার পরও রুম বুকিং হয়নি। শীতের মৌসুম ৩ মাস, পূজা ও ঈদের ছুটিতে পর্যটন ব্যবসা হয়। বাকী ৯ মাস আমাদের তেমন কোন ব্যবসা হয় না। শুধু ঈদ আর বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে আমরা ব্যবসা করে থাকি। তবে ডেঙ্গু, ভারী বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিবেশ পর্যটক না আসার কারণ হিসেবে দেখছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে সারাদেশের মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এজন্য মানুষ কোথাও বের হচ্ছেন না। অনেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তাই হয়তো সেই ভয়ে কেউ ঘুরতে আসছেন না।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, গত জুন থেকেই পর্যটন ব্যবসায় মন্দাভাব চলছে। ঈদের ছুটির এ সময়টার দিকে অনেকেই তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু প্রতিবছরের তুলনায় এবার ছুটিতে পর্যটক আসেনি। বছরের কিছু সময়ে পর্যটন ব্যবসা ভালো হয়ে থাকে। বিশেষ করে বছরের শেষ তিন মাস এবং দুই ঈদের ছুটির দিকে তাকিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। ঈদে পর্যটন ব্যবসা জমে উঠবে এমন আশায় বুক বেঁধেছিলেন সবাই।
বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ বলেন, স¤প্রতি অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও বান্দরবানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম। তবে পর্যটকদের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক কাজ করছে। প্রতিবছর ঈদের আগে হোটেল-মোটেল এবং অধিকাংশ গাড়ি বুকিং হয়ে যেত। কিন্তু এবার তেমনটি ঘটেনি। যার কারণে পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জেলা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার জানান, আমরা আশা করছিলাম টানা বন্ধ থাকায় এবার পর্যটকদের বেশ সমাগম হবে। পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে সেজন্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও টুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে। কিন্তু পর্যটক তেমন একটা দেখা যায়নি।