ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়

31

ঈদের টানা ছুটিতে এবার পর্যটকের ঢল নেমেছে পর্যটন শহর কক্সবাজারে। পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে জেলা শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো।
প্রতিদিন বিকাল থেকে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় জমছে। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে শহরের সবকটি হোটেল-মোটেলের সব রুম বুক হয়ে গেছে। ঈদের ছুটিতে লক্ষাধিক পর্যটক বেড়াতে আসায় গত বৃহ¯পতিবার থেকে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে দল বেধে বা সপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে আসছে মানুষ। কিন্তু একই সঙ্গে লক্ষাধিক মানুষ কক্সবাজারে বেড়াতে আসায় সড়কে বাড়তি যানবাহনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ভয়াবহ যানজটে পর্যটকদের পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দেরও। তবে পর্যটকদের আগমনে শহরের বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকতসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে। ঈদের বন্ধে গত ৫ বছরে এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটক এসেছে বলে মনে করছেন হোটেল মালিকরা। পর্যটকের চাপে কক্সবাজার শহরের চার শতাধিক আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্টহাউস, কটেজ ও রেস্ট হাউসের প্রায় সব কক্ষ বুকিং রয়েছে। এই সুযোগে কিছু হোটেল মালিক তাদের কক্ষভাড়া বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কক্সবাাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের (টোয়াক বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান,
এবারের ঈদুল আযহার তিনদিনের ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটির দিন যুক্ত হওয়ায় ৫ দিনের টানা বন্ধে মানুষ মনভরে বেড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে প্রশাসন টেকনাফ সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়নি। পর্যটকরা সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ পেলে আরও দ্বিগুন খুশি হতো। তবে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ না থাকায় এবার ট্যুর অপারেটররা কক্সবাজার টু বান্দরবান, দরিয়ানগর-হিমছড়ি-ইনানী, টেকনাফ ও রামু ভ্রমণের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজার থেকে বান্দরবান ভ্রমণের প্যাকেজ কিনেছেন। এ কারণে এবারের ঈদের ছুটিতে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারের পাশাপাশি বান্দরবানও ভ্রমণ করবেন বলে আশা করছি।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস মালিক সমিতির সহসভাপতি শফিকুর রহমান কো¤পানি বলেন, এবারের ঈদের তিনদিনের ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটির দিন যুক্ত হওয়ায় এবার ৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক এসেছে।
কক্সবাজার সি-বিচ হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি নুরুল আবছার বলেন, কক্সবাজার শহরের হোটেলগুলোতে লক্ষাধিক মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ইতোমধ্যে শহরের চার শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসে ঈদের পরদিন থেকে সব কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে। তবে রবিবার থেকে চাপ অনেকটা কমবে।
পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবারের ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ জেলার অন্যান্য পর্যটন ¯পট দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, টেকনাফ, রামু, মহেশখালী, সোনাদিয়া, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক এবং পাশ্ববর্তী বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি লেক ও লামার মিরিঞ্জা পর্বতমালা দেখতে পর্যটকরা ভিড় করছেন।
বনবিভাগের কলাতলী পিকনিক ¯পটের ইজারাদার সায়েম মোহাম্মদ ডালিম বলেন, দরিয়ানগরে আগের বছরের তুলনায় পর্যটক কমেছে।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটিতে শহরে পর্যটকদের চাপে তীব্র যানজটের যাতে সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে অবৈধ গাড়ি আটকের অভিযান চলছে। ফলে যানজট তুলনামূলক কমেছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফজলে রাব্বি বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে ঘুরতে পারে সে বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ শহর ও শহরের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে টহল দিচ্ছে। এছাড়া সমুদ্র সৈকতের কয়েকটি পয়েন্টে দিনরাত টহল পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।