ঈদগাঁহতে একাধিক ছাত্রীকে যৌননিপীড়ন, শিক্ষক আটক

19

কক্সবাজারের ঈদগাঁহতে অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আবুল কাসেম (৪২) নামের কেজি ও নুরানী মাদ্রাসার এক প্রধান শিক্ষককে জনতার সহায়তায় আটক করেছে ঈদগাঁহ পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে কথিত প্রধান শিক্ষক কাসেমকে কর্মস্থল থেকে আটক করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ইউনিয়নের পূর্ব ভুতিয়া পাড়া মাছুয়াখালী মোহাম্মদীয়া নুরানী মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে পরিত্যক্ত ক্লাস রুমে।
আটককৃত আবুল কাসেম ঈদগাঁহ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মাছুয়াখালী মুরা পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে এবং মোহাম্মদীয়া কেজি নুরানি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। লম্পট চরিত্রহীন ভণ্ড প্রধান শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংগঠিত ঘটনায় এক ভিকটিমের পিতা বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর রবিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে পরীক্ষা চলাকালীন ২য় শে্িরণর এক ছাত্রীকে ফুসলিয়ে মাদ্রাসার পরিত্যক্ত কক্ষে নিয়ে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে ২য় শ্রেণির এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক যৌন নিপীড়ন চালায়। এ সময় যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে স্পর্শ করে। অনুরূপভাবে পরদিন ৯ ডিসেম্বর সোমবার ৩য় শ্রেণির আরো একজন ছাত্রীকে একই কায়দায় যৌন নিপীড়ন করে। প্রথম যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রী পরদিন ঘটনার বিস্তারিত মাকে জানালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে অবগত করেন।
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে বেরিয়ে আসে আরো একজন ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি। পরে উভয়ের পরিবার মাদ্রাসার সভাপতি মিজানুর রহমানকে পুনরায় অবগত করেন। সভাপতি নিজেই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে ভিকটিমদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সে সময় তারা ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেলে ঘটনার সত্যতা পান তারা। তাছাড়া একজনকে একাধিকবার যৌন নিপীড়ন চালায় বলেও স্বীকার করেন একজন ভিকটিম। তাদের স্বীকারোক্তি পেয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মাদ্রাসায় যান সভাপতি। সেখানে আলাদা কক্ষে বসে নরপশু লম্পট চরিত্রহীন ভণ্ড প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেমের স্বীকারোক্তি নেন। তিনি ঘটনার বিস্তারিত স্বীকার করলে উপস্থিত স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গনপিটুনি দেয়ার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক সংবাদ পেয়ে ঈদগাঁহ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামানের নির্দেশে এসআই সনজিত চন্দ্র নাথসহ একদল সঙ্গীয় পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে জনতার রোষানল থেকে উদ্ধার করে তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসে। ঈদগাঁহ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান জানান, চরিত্রহীন কথিত প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেমকে আটক করা হয়েছে। মামলা করার জন্য সদর মডেল থানায় পাঠানো হয়েছে ভিকটিমদের পক্ষে অপর এক জনের বাবাকে। সে সাথে একমাত্র আসামি আবুল কাসেমকেও আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।