ই-পাসপোর্ট জুনের আগে মিলছে না

88

আরেক দফা পেছানো হল ই-পাসপোর্ট (ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট) প্রদান কার্যক্রম। আগামী জুনের আগে মিলছে না ই-পাসপোর্ট। ফলে সে সময় পর্যন্ত মেশিন রিডেবল পাসপোর্টই ইস্যু করা হচ্ছে। তবে জুন থেকে ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে।
জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ই-পাসপোর্ট চালুর কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর থেকে এ পাসপোর্ট চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও পরবর্তীতে তা পিছিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে করা হয়। কিন্তু জানুয়ারিতেও তা চালু করা সম্ভব হয়নি। আগামি জুন মাস নাগাদ ই-পাসপোর্ট চালু করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এ পাসপোর্টের মেয়াদ হবে বয়স ভেদে ৫ ও ১০ বছর। এটি নকল করার কোন সুযোগ থাকছে না বলে জানান পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
মনসুরাবাদ বিভাগীয় পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের দুটি সহ দেশের সব পাসপোর্ট অফিস থেকেই এধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে।
মনসুরাবাদ অফিস থেকে নগরীর বন্দর, ডবলমুরিং (সদরঘাট), পাহাড়তলী (আকবরশাহ), বায়েজিদ, খুলশী, পতেঙ্গা, হালিশহর এবং জেলার ভূজপুর, স›দ্বীপ, মিরসরাই, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, রাউজান এলাকার বাসিন্দাদের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। একইসাথে এ অফিসে ভিসা প্রদানের কাজটিও করা হয়। আর পাঁচলাইশ অফিস থেকে বাঁশখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া ও বোয়ালখালী এবং নগরীর কোতোয়ালী, কর্ণফুলী, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও চকবাজার (পাঁচলাইশ ও কোতোয়ালীর অংশ) এলাকার আবেদনকারীদের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।
পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, ই-পাসপোর্ট মেয়াদ হবে বয়স ভেদে ১০ ও ৫ বছর। ১৮ বছরের নিচে বয়সীরা ৫ বছর মেয়াদি এবং ১৮ বছরের উপরের বয়সীরা পাবেন ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট। তবে তারা চাইলে ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে পারবেন। বর্তমানে চালু থাকা এমআরপির তুলনায় ই-পাসপোর্টে খরচ বেশি হবে। ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট হবে ৬৪ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদের পাসপোর্ট হবে ৪৮ পৃষ্ঠার।
বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক আবু নোমান মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, দেশে শিগগির ই-পাসপোর্ট চালু হবে। সরকার এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাসপোর্ট অধিদপ্তরও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্তই আমরা বাস্তবায়ন করবো।
জানা যায়, এরই মধ্যে চট্টগ্রামের দু’টি পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালকসহ কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। কিভাবে এ পাসপোর্ট দেয়া হবে, গ্রাহকরা কি কি দেবে সবই প্রশিক্ষণে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভেরিডোস কোম্পানি তিন কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরবরাহ করবে। ঢাকার উত্তরায় বুকলেটের জন্য একটি অ্যাসেম্বলি কারখানা স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ডাটা সেন্টার ও একটি ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার এবং অত্যাধুনিক পার্সোনালাইজেশন সেন্টার নির্মাণ করা হবে। ১০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জার্মানিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে ভেরিডোসের সঙ্গে চুক্তি মূল্য তিন হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া কাস্টম ডিউটি, ভ্যাট ও এআইটি এক হাজার ২৪ কোটি টাকা এবং অন্যান্য ব্যয় ২০৭ কোটি টাকা।
প্রাথমিকভাবে ২০ লাখ পাসপোর্ট জার্মানি থেকে প্রিন্ট করিয়ে সরবরাহ করা হবে। এরপর আরও ২ কোটি ৮০ লাখ পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সেজন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হবে। পরে ওই কারখানা থেকে ই-পাসপোর্ট ছাপানো অব্যাহত রাখা হবে।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জুনে ই-পাসপোর্ট ইস্যু করতে যাবতীয় কার্যক্রম শুরু করেছে অধিদপ্তর। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।