ই-পাসপোর্ট আবার পেছাল

33

চলতি বছরের জুলাই মাসে উদ্বোধনের ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলেও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানালেন, আগামী ডিসেম্বরের আগে ই-পাসপোর্ট চালু করা সম্ভব হবে না। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি। এই বৈঠকে জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বুকলেট ও ২ কোটি লেমিনেশন ফয়েল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ৪১ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ই-পাসপোর্ট চালু না হওয়ায় বর্তমান সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যের ডি লা রু থেকে এমআরপির বুকলেট ও ফয়েল কিনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
গত মে মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে জুলাই থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া শুরু করার কথা জানানো হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, জুলাই মাসের ‘যে কোনো সময়’ প্রধানমন্ত্রী ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন করবেন। কিন্তু জুলাই পেরিয়ে আরও দুই মাস গড়াতে চললেও তার আর কোনো খবর নেই।
ই-পাসপোর্ট চালু না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘একটি জার্মান কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়েছিল তারা অনেক দূর এগিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন এই বলে যে এটি ডিসেম্বরের পর যাবে না। ডিসেম্বরের মাঝে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন এই প্রকল্পটি। ডিসেম্বরের মাঝেই এ পাসপোর্ট আপনারা পাবেন’। খবর বিডিনিউজের
বাংলাদেশে হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট বা এমআরপি প্রবর্তনের পর এক দশকও পার হয়নি। কিন্তু এমআরপির ডেটাবেইজে ১০ আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্ট করার ঘটনা দেখা যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিক ভোগান্তি কমাতে এবং একজনের নামে একাধিক পাসপোর্ট করার প্রবণতা বন্ধ করতে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) চালু করতে উদ্যোগী হয় সরকার। গত বছরের ২১ জুন প্রকল্পটি একনেকের সায় পায়।
ই-পাসপোর্ট নামে পরিচিত বায়োমেট্রিক পাসপোর্টে স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যাতে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা বসানো থাকে। এ পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাসপোর্টের ডেটা পেইজ এবং চিপে সংরক্ষিত থাকে।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে গত বছরের জুলাইয়ে জার্মান কোম্পানি ভেরিডোসের সঙ্গে চুক্তি করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদপ্তর। সোয়া ৩ হাজার কোটি টাকায় বাংলাদেশকে ই-পাসপোর্ট ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করছে তারা। ওই টাকায় প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশকে ২০ লাখ পাসপোর্ট বুকলেট, ২ কোটি ৮০ লাখ পাসপোর্ট তৈরির সরঞ্জাম, আনুষঙ্গিক হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও ১০ বছর রক্ষণাবেক্ষণ সেবা দেবে।