ইয়াবা পাচারে ক্যাম্পের রোহিঙ্গা সিন্ডিকেট বেপরোয়া

48

মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকারী কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা, শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী জিয়াবুল হক পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাগারারে থাকলেও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা অধরা থেকে যাওয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক ইয়াবা ব্যবসা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও জিয়াবুলের বোনের জামাই রোহিঙ্গা ছব্বির আহমদ তার যাবতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন দাতা সংস্থা কর্তৃক বিতরণকৃত ত্রান সামগ্রী বিক্রি করে আরাম আয়েশে দিন যাপন করলেও রোহিঙ্গারা তাদের বাপ দাদার পেশা বাদ দেয়নি। কোন কাজ কর্ম না থাকায় এসব রোহিঙ্গারা ইয়াবা পাচার ও স্থানীয়ভাবে লেনদেনসহ ইয়াবা সেবনে ঝুঁকে পড়েছে। উখিয়া থানা পুলিশ প্রতিদিন রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারীদের আটক করলেও শীর্ষ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ইয়াবা পাচারকারীরা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা জিয়াবুল হকের সিন্ডিকেটের সদস্যরা কুতুপালং ক্যাম্প ভিত্তিক ইয়াবা ব্যবসা জিইয়ে রেখেছে। বুধবার কুতুপালং ক্যাম্প ঘুরে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ উপজেলার রোহিঙ্গা অধ্যূষিত সীমান্ত এলাকা ঘুরে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয় উখিয়ার বালুখালী,রহমতেরবিল,আঞ্জুমানপাড়া ও রাজাপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া, করইবনিয়া, হাতিমোরা এলাকা।
বিশেষ করে শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারী তাজনিমারখোলা ক্যাম্পের নজিবুল হক, টিভি টাওয়ার এলাকায় বসবাসরত রাখাইনের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক ইয়াবা জগত নিয়ন্ত্রক চিকুইন্যাসহ প্রায় ১০/১২জন ইয়াবা কারবারী। এরা আটক জিয়াবুল হকের অন্যতম সহযোগি। কুতুপালং ক্যাম্প থেকে ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক করইবনিয়া গ্রামের মো. হোসাইনের ছেলে আব্দুস ছালাম (৪৮) ও রুমখা বাজার পাড়া গ্রামের মৃত জমির আহম্মদের ছেলে রাজা মিয়ার (৩৭) স্বীকারোক্তিতে মতে, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ইয়াবার চালান সারা দেশে পাচার হচ্ছে। তারা নিজেরাও জিয়াবুলের সিন্ডিকেটের সদস্য বলে দাবী করেন। তবে বর্তমানে তার বোনের জামাই ছব্বির আহমদ এ গুলো দেখাশোনা করছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, থাইংখালী রহমতের বিল এলাকার সোহেল, জাবেদ, হিজোলীয়া গ্রামের শফির ছেলে মীর জাফর, ঠান্ডা মিয়ার ছেলে বাবুল, খয়রাতি পাড়া গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে আতা উল্লাহ, হাজির পাড়া গ্রামের বদিউর রহমান সিকদারের ছেলে মীর আহম্মদ, টিএন্ডটি লম্বাঘোনা গ্রামের মৃত ফকির আহম্মদের ছেলে মাহমুদুল করিম খোকা (বর্তমানে নিখোঁজ), দোছড়ি গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে মাহমুদুল হক, বালুখালী উখিয়ার ঘাট গ্রামের বুজুরুজ মিয়া(বর্তমানে কারাগারে), রহমতেরবিল গ্রামের শামশুল আলমের ছেলে আব্দুর রহিম, পশ্চিম মরিচ্যা গোরাইয়ার দ্বীপ গ্রামের শামশুল হকের ছেলে আল আমিন ভুট্রো ও একই গ্রামের মোজাফফর আহম্মদের ছেলে আব্দুল আজিজ, ইউপি সদস্য মোস্তাক আহমদ সহ ২৫/৩০ জনের একটি সিন্ডিকেট রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক ইয়াবা লেনদেনসহ তাদের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য সর্ম্পক গড়ে উঠায় অনেক সময় রাতের বেলায় এসব ইয়াবা কারবারীরা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকে বলে জানা গেছে। তবে সম্প্রতি হলদিয়াপালং ইউনিয়নের শীর্ষ ইয়াবা কারবারী আব্দু শুক্কর ড্রাইভার পুলিশের হাতে আটক হলেও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে উখিয়ার শীর্ষ কয়েকজন ইয়াবা কারবারীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করার কথা স্বীকার করে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের জানান, ইয়াবা ও মাদকের বিস্তার নস্যাৎ করার জন্য পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। যার ধারাবাহিকতায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে ইয়াবা ও মাদক কারবারীকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।