ইয়াবা ও অস্ত্র চালাচালির অভিযোগ

99

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফরা একে অপরের বাসায় ইয়াবা ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে মর্মে পাল্টা পাল্টি অভিযোগ দিয়েছে দুই পক্ষ। সোমবার আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া রীতা প্রভা সুশীল এর স্বামী টিটু শর্মা একই কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় আবুল কালাম এবং তার স্ত্রী সিনিয়র ষ্টাফ নার্স ফাতেমা জান্নাত হান্নার বিরুদ্ধে আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমানের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে প্রকাশ- আমার স্ত্রী রীতা প্রভা সুশীল আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন আয়া। ওয়ার্ডবয় আবুল কালাম ও তার স্ত্রী সিনিয়র ষ্টাফ নার্স ফাতেমা জান্নাত হান্না বিভিন্নভাবে আমার স্ত্রীকে হয়রানি ও চাকরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করে আসছে। এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে মৌখিক অভিযোগ প্রদান করায় আবুল কালাম ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে শারীরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি করার চেষ্টা করে এবং ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে আমাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদর্শন করে।
এদিকে ওয়ার্ড বয় আবুল কালাম বাদী হয়ে টিটু এবং রীতার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে। ওই অভিযোগে আবুল কালাম দাবি করেন, রীতা প্রভা সুশীল প্রায়ই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকে। আমার স্ত্রী হান্না ওয়ার্ড ইনচার্জ হওয়ায় রীতার অনুপস্থিতির প্রতিবাদ করে এবং হাজিরা খাতায় তাকে অনুপস্থিত দেখায়। এই নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে রীতার স্বামী টিটু চিহ্নিত চোর ও ইয়াবা ব্যবসায়ী আনিসের দ্বারা আমাকে মোবাইলে ফোন দিয়ে রেকর্ডিং করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে।
ঘটনার বিষয়ে আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শহিদুর রহমান একটি তদন্ত কমিটি করলেও মঙ্গলবার সকালে তদন্ত চলাকালীন সময়ে তিনি ফাতেমা জান্নাত হান্না এবং আবুল কালামকে সাথে নিয়ে ওই হাসপাতালের অফিস সহায়ক গৌতম দে’র পুত্রবধূ স্ত্রী শিউলী দের বাসায় গিয়ে তাকে টিটুর বিরুদ্ধে জোর পূর্বক মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বল প্রয়োগ করে এবং মিথ্যা সাক্ষ্য না দিলে তার স্বামীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন বলে শিউলি দে’র স্বামী সুকান্ত দে এ প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে জানান।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জোরপূর্বক সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেন বরং শিউলী উপস্থিত না হয়ে তদন্ত কমিটির কাজে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে বলে দ্রæত তদন্ত কাজের অগ্রগতির জন্য হাসপাতালের এক মাহিলা স্টাফকে সঙ্গে নিয়ে তদন্ত কাজে সহযোগিতার কথা বলতে বাসায় গিয়েছিলেন বলে দাবী করেন। অন্যদিকে শিউলী দে সাংবাদিকদের জানান, আমি কারো কোন ঘটনার বিষয়ে কিছু জানিনা।
তবুও আমাকে জোর পূর্বক সাক্ষ্য বানানোর জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সিনিয়র স্টাফ নার্স তিনি ফাতেমা জান্নাত হান্না এবং ওয়ার্ড বয় আবুল কালাম আমার বাসায় এসে আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন। আমি সাক্ষ্য না দিলে আমার স্বামীর ক্ষতি হবে বলে হুমকি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান সিভিল সার্জন অংশুই প্রু চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং পুলিশ পাঠিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তিনি আরো বলেন, একজন কর্তার কাছে তার সমস্ত স্টাফের সমান অধিকার থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। যদি এর ব্যতয় ঘটে তাহলে তাকে তার ফল ভোগ করতে হবে।