ইসলামী ফ্রন্টের ইশতেহার ১৮টি বিশেষ অঙ্গীকার

68

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মোমিন রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন দলের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান।
ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল, দেশে সর্বজনীন কল্যাণ ও ন্যায়-নীতিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা। ১৮ টি বিশেষ অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এই ইশতেহার ঘোষণা করেছে।
এগুলো হল, শিক্ষিত বেকার ও তরুণ প্রজন্মকে কর্মক্ষম জনশক্তিতে রূপান্তর। অস্বচ্ছল ও মধ্যবিত্ত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে মুক্তিযোদ্ধা পল্লী নির্মাণ। দ্রবমূল্য সহনীয় পর্যায়ে ও সর্বসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ।
ছিন্নমূল, গৃহহীন, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনসাধারণের জন্য পৃথক পদ্ধতিতে আবাসন ব্যবস্থা। বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্রমধারা উন্নীতকরণে ব্যবস্থা নেওয়াসহ শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার। নাগরিকদের জন্য আধুনিক বিশ্বের আদলে হেলথকার্ড এর মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা প্রদান। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করা। মদিনা সনদের আলোকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২৪ ঘণ্টাব্যাপি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া এবং শিফটিং চেইঞ্জ পদ্ধতির মাধ্যমে বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। নারী অধিকার উন্নয়নকল্পে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন ও নারীর অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করা। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, জনগণের সুরক্ষা, কল্যাণ ও উন্নয়ন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, ফিলিস্তিনের মুসলিম নাগরিকসহ সারা বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিমদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত তৈরি। ইসলাম ও নবী করিম (দ.) সম্পর্কে কটুক্তিকারী ও ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। কৃষকদেরকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করার জন্য কৃষিজাত শিল্পে অধিক পরিমাণে বিনিয়োগসহ কৃষি উন্নয়ন। হিজরী নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা ও উৎসব ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সুফীবাদী আদর্শে লালিত একক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে গণমানুষের কল্যাণে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে শান্তিকামী জনতার দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। এ রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার পর হতে দেশের মহান স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। রাজনীতির লক্ষ্য গণমানুষের কল্যাণ সাধন হলেও বর্তমানে রাজনীতির সর্বজনীনতার রূপ উপেক্ষিত। তাই গণ মানুষের কল্যাণে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি আসনে ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থীর উপর হামলা, রাঙ্গুনিয়ায় নেতাকর্মীদের পুলিশি হয়রানিসহ বিভিন্ন স্থানে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। তবুও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন কমিশনের কার্যকর ব্যবস্থা পারে জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা করতে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদের সঞ্চালনায় ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, অধ্যক্ষ তৈয়্যব আলী, সৈয়দ মুহাম্মদ হোসাইন, পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, অধ্যাপক সৈয়দ জালাল উদ্দীন আল-আযহারী, মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ নুর হোসাইন।
এসময় অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা ওবাইদুল মোস্তফা কদমরসুলী, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৪ আসনের প্রার্থী মাওলানা আশরাফ হোসাইন, চট্টগ্রাম-৭ আসনের প্রার্থী শাহজাদা সৈয়্যদ আবু নওশাদ নঈমী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী, এমদাদুল ইসলাম, এইচ এম শহীদুল্লাহ, নুরুল্লাহ রায়হান খান, ফরিদুল ইসলাম, রিয়াজ হোসাইন, মাছুমুর রশীদ কাদেরী, মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। খবর বিজ্ঞপ্তির