ইসলামপুরে চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠে সন্ত্রাসী হামলায় আহত ৬

45

কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুরে চিংড়ি ও মৎস্য ঘেরে ৪ ঘন্টা ব্যাপী শতাধিক রাউন্ড গুলি বর্ষণ, ভাঙ্গচুর, লুটপাট ও ৪ জনকে মারধর এবং দুই শ্রমিককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের একজনকে অমানবিকভাবে নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। গত ৩ ফেব্রæয়ারি সদরের ইসলামপুর ইউনিয়নের উত্তর নাপিতখালী গোল্ডেন ফার্ম এসোসিয়েট নামের একটি চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এদিন রাত ৮ টা থেকে দফায় দফায় রাত ১২ টা পর্যন্ত চলে এ ডাকাতির ঘটনা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশেপাশের এলাকা থেকে গুলির খালি খোসা এবং ডাকাতদলের ফেলে যাওয়া একটি ওয়াকিটকি (ওয়ারলেস) উদ্ধার করেছে ঈদগাঁহ তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ। তবে ডাকাত দলের সদস্যদের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী হলেও একজনকেও আটক করতে পারেনি থানা পুলিশ।
সংগঠিত ডাকাতি ও লুটপাটে বাঁধা দেওয়ায় লবণ চাষী মোস্তাক আহমদ (৫০) এবং নাজু নামের অপর এক শ্রমিককে তুলে নিয়ে যায়। সে সময় ফের বাঁধা দেওয়ায় আমানু, রমজান, সোহেল, আবছার নামের আরো ৪ জনকে মারধর করেছে বলে জানা গেছে। রাতের অন্ধকারে প্রহৃত নাজুকে ছেড়ে দিলেও সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় ছেড়ে দেয় মোস্তাক আহমদকে। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে আশংকাজনক হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে বাঁশখালী এলাকার হাকিম আলীর ছেলে এবং ঐ লবণ মাঠের বর্গা চাষী।
গোল্ডেন ফার্ম এসোসিয়েটের পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী জানান, ইসলামপুর ইউনিয়নের জুমনগর এলাকার আক্তার আহমদের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন অস্ত্রধারীরা এসে প্রথমে গুলি বর্ষণ করে ভীতি প্রদর্শন করে। তারপর ঘেরের দুটি বাসায় ভাংচুর চালিয়ে পানি উত্তোলনের ৪ টি মেশিন, চুলাসহ গ্যাস সিলিন্ডার দুটি, সৌর বিদ্যুৎ দুটি, মাছ শিকারের ১০ টি জাল, কলবোট জাল দুটি, লবণ বিক্রির নগদ ৭৫ হাজার টাকাসহ প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, তাদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দুই শ্রমিককে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং আরো ৪ জনকে মারধর করে আহত করে। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও মোস্তাক আহমদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘেরটির অংশীদাররা এক হয়ে ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা পাকা গুলি বর্ষণ করে পশ্চিম দিকে পালিয়ে যায়। ঘেরের অংশীদার জসিম উদ্দিন জানান, তারা জলপথে বোটযোগে এসে লুটপাট করেছে। তাদের ধারণা সবার বাড়ি চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হতে পারে। সংগঠিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে ঈদগাঁহ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে নদী পার হয়ে চকরিয়া উপজেলা খুটাখালীর দিকে চলে যায়। এসময় ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে ৩ টি গুলির খালি খোসা, এবং একটি ওয়াকিটকি (ওয়ারলেস) উদ্ধার করা হয়। যদিও বা পরে চকরিয়া থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কাউকে আটকের চেষ্টা চালায়নি বলে অভিযোগ করেন অংশীদাররা।
জানতে চাইলে ঈদগাঁহ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। সদর এবং চকরিয়া উপজেলার মধ্যবর্তী এলাকা হওয়ায় দুর্বৃত্তরা দ্রæত খুটাখালী ইউনিয়নে পালিয়ে যায়। আটকের চেষ্টা চালানো হয়েছে অনেকক্ষণ। তিনি বলেন, ২৫/৩০ রাউন্ড মত গুলি বর্ষণ হয়েছে। ৩ টি খালি খোসা ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘের মালিক অথবা অংশীদার এবং চাষীর পক্ষে কেউ মামলা করলে তদন্ত পূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে।