ইরানে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সৌদি পত্রিকার আহব্বান

30

তেলের পাইপলাইনে হামলার ইরানকে দায়ী করে দেশটিতে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহব্বান জানিয়েছে সৌদি আরব। রাজপ্রাসাদের ঘনিষ্ঠ একটি দৈনিক পত্রিকায় এই আহব্বান জানানো হয়েছে। পারসিয়ান উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে সৌদি পত্রিকার এই আহব্বানে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এ খবর জানিয়েছে। পারমাণবিক চুক্তি ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই কূটনৈতিক বিরোধ ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
স¤প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ও উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গিবিমানবাহী রণতরী ও অত্যাধুনিক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পর থেকে এই উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। এরপর রবিবার আমিরাতের উপকূলে চারটি ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ও সৌদি আরবের রিয়াদের কাছে আরামকোর দুটি তেলের স্থাপনায় ড্রোন হামলা ঘটে। মার্কিন তদন্তকারীদের বিশ্বাস ইরান অথবা তাদের সমর্থিত কোনও গ্রুপ এই বিস্ফোরণের সাথে জড়িত। ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেলে সৌদি স্থাপনায় ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করা হয়েছে। তবে তেহরান বিস্ফোরণে নিজেদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহব্বান জানিয়েছে।

সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের ছেলে ও উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজকুমার খালিদ বিন সালমান টুইটারে বলেছেন, সৌদি আরামকোর দুটি পাম্পিং স্টেশনে ড্রোন হামলার ‘নির্দেশ দিয়েছে তেহরানের শাসকরা এবং চালিয়েছে হুথিরা’। শিয়া মতালম্বী ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে ইরান আর ইয়েমেনের শাসকদের সমর্থন দিচ্ছে সৌদি আরব। রাজপরিবার ঘনিষ্ঠ সৌদি আরবের একটি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয়তে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইরানে গোপন হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহব্বান জানানো হয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ হুথিদের ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি সরবরাহের অভিযোগ এনেছে, যা অস্বীকার করে আসছে তেহরান।
ইংরেজিতে প্রকাশিত আরব নিউজ-এর প্রথম পাতার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘এটা স্পষ্ট যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সঠিক বার্তা পাচ্ছে না ইরান। তাদের উচিত আরও কঠোরভাবে আঘাত করা’। যদিও এতে হামলার লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে, সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগের দেশটিতে হামলা চালিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে এ ধরনের হামলার উদাহরণ রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত আরাবিয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান আলি শিহাবি জানান, ধারণা করা হচ্ছে যে ইরান যদি সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় হামলা চালিয়ে পার পেয়ে যায় তাহলে পুরো উপসাগরের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং তেলের নিরাপত্তায় খরচ বাড়বে। আলি শিহাবি মনে করেন, ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করবে। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাত কে নিয়ে নিজেরা কোনও পদক্ষেপ হয়ত নেবে না। তিনি বলেন, কেউই ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চাইবে না। কিন্তু তাদেরকে হুমকি হয়ে ওঠা থেকে বিরত রাখতে হবে। ইরানের নৌবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা কমিয়ে আনতে হবে।