ইরানের বাজেট ঘোষণা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব স্বীকার করলেন রুহানি

44

যুক্তরাষ্ট্র ছয় জাতির পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রথম বার্ষিক বাজেট ঘোষণা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। বাজেট ঘোষণার সময় রুহানি স্বীকার করেছেন, চুক্তি সংস্কার না করায় ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ইরানিদের জনজীবনে প্রভাব ফেলবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। ইরানি মুদ্রায় ৪ হাজার ৭০০ ট্রিলিয়ন রিয়ালের বাজেট ঘোষণার সময় রুহানি বলেন, নিঃসন্দেহে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইরানিদের জীবনে প্রভাব ফেলবে। যদিও এর আগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পাল্টা পদক্ষেপ বা মোকাবিলার কথা বলে আসছিল ইরান।
রুহানি আগে দাবি করেছিলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেল বিক্রির ক্ষমতা ইরানের আছে। যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এক্ষেত্রে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বানচাল করে দেওয়া হবে। আমেরিকা ইরানের তেল বিক্রি শূন্যে নামিয়ে আনতে চায়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আমরা বিক্রি অব্যাহত রাখবো। একই রকম অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছিলেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা খামেনি। ইরানের ৭০০ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, জাহাজ ও বিমান এখন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছে। এরমধ্যে বড় বড় ব্যাংক ও তেল রফতানিকারক দেশ ও শিপিং কোম্পানিও রয়েছে। ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যকারী আটটি দেশকে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রস্তাবিত বাজেট আগামী ২১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে।
ডলারের হিসেবে যার পরিমাণ ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রুহানি বলেন, আগামী বছর সরকারি কর্মীদের বেতন ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া খাবার ও ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রেও ১৪ বিলিয়ন ডলার বাজেট রাখা হয়েছে। আগের বছর যেটা ছিল ১৩ বিলিয়ন।
কর্মকর্তারা বলেন, এই বাজেট মূলত নিম্ন আয়ের ইরানিদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা। এর মধ্যে সরকারি কর্মী ও অবসরপ্রাপ্তরাও রয়েছেন। ২০১৫ সালের জুনে তেহরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে ৬ জাতিগোষ্ঠী চুক্তি স্বাক্ষর করে। ভিয়েনায় নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্য রাষ্ট্র (পি-ফাইভ) যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি (ওয়ান) চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিনিময়ে দেশটির ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গত ৮ মে তা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৫ নভেম্বর পরমাণু চুক্তি পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প একে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ‘এযাবৎকালের সবচেয়ে কঠোর’ নিষেধাজ্ঞা হিসেবে আখ্যা দেন। ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে নিতে চান বলে জানান তিনি।