ইরানের তেল কিনতে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়ের মেয়াদবৃদ্ধি’ চায় ভারত

25

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেই ভারত ইরানের কাছ থেকে এখনকার হারে তেল কিনতে ওয়াশিংটনের সহযোগিতা চাইছে। তেহরানের তেল কেনায় যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশের জন্য এ নিষেধাজ্ঞায় ছাড় আছে।
ছাড়ের এ মেয়াদ মে-র শুরু পর্যন্ত। বাণিজ্য নিয়ে দ্বন্দ্বের মধ্যেও নয়া দিল্লি এখন ওই ছাড়ের মেয়াদ বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে এ সংক্রান্ত দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স। ভারত এখন প্রতিদিন তিন লাখ ব্যারেল ইরানি তেল কিনছে।
সা¤প্রতিক সময়ে এ হার আগের তুলনায় কিছুটা কম হলেও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ছাড় অব্যাহত রাখতে ওয়াশিংটনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, জানুয়ারিতে ভারতের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি তাদের জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রিপারেন্সেস (জিএসপি) সুবিধার তালিকা থেকে ভারতকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনাও বিরাজ করছে। ১৯৭০ সাল থেকেই নয়া দিল্লি যুক্তরাষ্ট্রে সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা নিয়ে আসছিল। জিএসপি সুবিধা তুলে নিলে ভারতের ৫৬০ কোটি ডলার পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত প্রবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিএসপি নিয়ে এই টানাপোড়েনের মধ্যেও নয়া দিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতি মাসে এক কোটি ২৫ লাখ ব্যারেল তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা অব্যাহতি চাইছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছর ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে তেহরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। নভেম্বরে ওয়াশিংটন ইরানের ওপর পুরনো সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে; এর মধ্যে ইরানি তেল কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞাও আছে। কেবল চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, তুরস্ক, ইতালি ও গ্রিসের ক্ষেত্রে স্বল্প পরিমাণ ইরানি তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দেওয়া হয়।
প্রথম দফার এ ছাড়ের মেয়াদ মে-র ৪ পর্যন্ত থাকছে। নিষেধাজ্ঞা থেকে স্বল্প সময়ের জন্য অব্যাহতি দিলেও ওয়াশিংটন শুরু থেকেই সবগুলো দেশকে ইরানি তেল কেনার পরিমাণ ধীরে ধীরে শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য চাপ ঠিকই অব্যাহত রেখেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ব্যুরোর মুখপাত্র ভিনসেন্ট ক্যাম্পোস নিষেধাজ্ঞা অব্যাহতির মেয়াদ বাড়াতে নয়া দিল্লির তৎপরতা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি না হলেও বলেছেন, যে ৮টি দেশকে ছাড় দেয়া হয়েছে, সেসব দেশের ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে আলোচনা চলছে।
“ভারতসহ সব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাগুলো চলছে,” জানিয়েছে ক্যাম্পোস। গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে দক্ষিণ কোরীয় কর্মকর্তাদের আলোচনা চলছে বলে নিশ্চিত করেছে সিউল। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।