ইরানের তেল আমদানিকারকদের আর ছাড় দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

38

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অম্যান্য করে যেসব দেশ ইরানের কাছ থেকে তেল আমদানি চালিয়ে যাচ্ছে তাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে ইরানের তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের ওই সময় সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র। এবারে সেই সতর্কতা স্মরণ করিয়ে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিলো দেশটি। শিল্প সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, জানুয়ারিতে তৃতীয় বারের মতো কমেছে ইরানের অপরিশোধিত তেল রফতানি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পাওয়া দেশগুলো তেল না কেনায় দেশটি এখন নতুন ক্রেতার সন্ধান করছে।
গত বছর মে মাসে নতুন করে শুরু হয় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা। ওই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেওয়ার ঘোষণা দেন। ট্রাম্প দাবি করেন, ওই চুক্তিতে বড় ধরনের ভুল রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নতুন ও আরও ভালো চুক্তি চাই। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় আনতে আমরা চাই দেশটির শাসকগোষ্ঠী শত শত কোটি ডলার বাতিল হোক আর তারা তারল্য সংকটে পড়ুক। তিনি বলেন, চাপ দেওয়া ছাড়া ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রটি আলোচনার টেবিলে আসবে না। তেহরানের ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়েও নিজেদের অসন্তোষের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে তেহরান। তাদের দাবি, ব্যালাস্টিক মিসাইল কর্মসূচি একেবারেই প্রতিরক্ষামূলক। আর তা নিয়ে তারা কোনও আলোচনায় বসবে না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক দূত ব্রিয়ান হুক বলেন, আমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতা ক্রমবর্ধমানভাবে পূরণ করে চলেছে ইরান। আমরা ইরানের শাসক গোষ্ঠীর রাজস্ব আয় বৃদ্ধিকে বাতিল করতে চাই। তিনি বলেন, ইরানের রাজস্বের ৮০ শতাংশ আসে তেল রফতানি থেকে। আর এসব অর্থ ব্যয় হয় সন্ত্রাসবাদে। আমরা এই শাসকগোষ্ঠীর অর্থের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করতে চাই। হুক বলেন, ইরান থেকে তেল আমদানি কমানোয় তারা ওপর সন্তুষ্ট। তবে তিনি চান ইরানের তেল রফতানি আরও কমে যাক। তিনি বলেন, আমরা কেবল শুরু দেখতে পাচ্ছি।
গত বছরের নভেম্বরে ইরানের ওপর ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হওয়ার পর ইরানের আটটি বড় তেল ক্রেতা দেশকে ছাড় দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এদের মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। চলতি বছরের মে মাসে শেষ হবে সেই ছাড়ের মেয়াদ। এরপরে যারা ইরানের তেল কিনবে তাদের ওপর ওয়াশিংটন কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন হুক।
এদিকে ওমানের তেলমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন হামাদ আল রুহানি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্প বন্ধ করতে আরব দেশগুলোকে তাগিদ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।