ইরানের খামেনির ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা

49

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও দেশটির অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করার পর ইরানের ওপর চাপ বাড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে সোমবার নজিরবিহীন এ পদক্ষেপ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
দুই দেশের মধ্যে যখন চরম উত্তেজনার চলছে তখনই ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেন। এর ফলে ইরানের শত শত কোটি ডলারের সম্পদ আটকা পড়বে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মনুচিন।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন ভূপাতিত করার প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে নিষেধাজ্ঞাটি আরোপ করা হয়েছে, তবে অন্যকোনো কারণে হলেও এটি আরোপ করা হতো। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ‘সরকার শত্রুতামূলক আচরণ করছে’ দাবি করে এর জন্য খামেনিকে দায়ী করেন তিনি। খামেনির পাশাপাশি ইরানের নৌবাহিনী, এয়ারোস্পেস ও ইসলামিক রেভোলুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) আট জ্যেষ্ঠ কমান্ডারের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, “এই কমান্ডাররা ইরানের আমলাতন্ত্রের শীর্ষে বসে আইআরজিসির বিদ্বেষপরায়ণ তৎপরতার তত্ত¡াবধান করছে, যার মধ্যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী, আন্তর্জাতিক জলসীমায় বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে হয়রানি ও সেগুলোতে নাশকতা চালানো এবং সিরিয়ায় উপস্থিত থেকে অস্থিতিশীলতা তৈরি করা অন্তর্ভুক্ত।”
নিষেধাজ্ঞাগুলো ‘শক্তিশালী ও ইরানের ক্রমবর্ধমান উস্কানিমূলক পদক্ষেপের জবাব’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞার কারণে সবোর্চ্চ নেতা ও সর্বোচ্চ নেতার দপ্তর এবং তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্টরা ও তাদের দপ্তরগুলো প্রধান আর্থিক উৎস ও সমর্থন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।”
নতুন এই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য ইরানের নেতৃবৃন্দকে তাদের আর্থিক উৎসগুলোতে প্রবেশ করতে না দেওয়া, তাদের যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করা আটকানো অথবা তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পদ থেকে থাকলে সেখানে কার্যক্রম চালাতে না দেওয়া। “যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে যারাই উল্লেখযোগ্য লেনদেন করবে তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন,” বলেছে হোয়াইট হাউস।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই ইরানের কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে লক্ষ্যস্থল করেনি বলে জানিয়েছেন মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল দপ্তরের (ওএফএসি) সাবেক পরিচালক জন স্মিথ। “সাধারণত যখন আপনি একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে লক্ষ্যস্থল করবেন তখন আপনি পিছু হটছেন না। এটি তখনই ঘটবে যখন সব বিকল্পই শেষ হয়ে গেছে বলে আপনি বিশ্বাস করবেন,” রয়টার্সকে বলেছেন স্মিথ।
গত বছর ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর তেহরানের ওপর পুরোনো সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করাসহ নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পর থেকেই ওয়াশিংটন-তেহরান সংকটে নতুন উত্তেজনা শুরু হয়। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে। ওমান উপসাগরে তেলের ট্যাংকারে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দোষারোপ করেছে। ইরান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।