ইমাদ ওয়াসিমের ব্যাটে পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়

32

বারবার রঙ পাল্টানো ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিলেন অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিম। ক্রমশ মন্থর হয়ে যাওয়া পিচে খেললেন অসাধারণ এক ইনিংস। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের চোখ রাঙানি এড়িয়ে দলকে এনে দিলেন রোমাঞ্চকর এক জয়। টিকিয়ে রাখলেন পাকিস্তানের সেমি-ফাইনালের আশা। পাকিস্তানের শেষ ম্যাচ আগামী ৫ জুলাই, বাংলাদেশের বিপক্ষে।
লিডসের হেডিংলিতে শনিবার ৩ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান। ২ বল বাকি থাকতে ২২৮ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় যায় তারা।


২২৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানের ওপেনার ফখর জামান ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বিদায় নেন। আরেক ওপেনার ইমাম উল হক করেন ৩৬ রান। ৪৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন বাবর আজম। মোহাম্মদ হাফিজ ১৯, হারিস সোহেল ২৭ রানে বিদায় নেন। দলপতি সরফরাজ আহমেদ (১৮ রান) ও শাদাব খান (১১) উভয়েই ২য় রান নিতে গিয়ে রানআউট হলে ভয়াবহ অবস্থায় পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু ইমাদ ওয়াসিম দারুণ আত্মবিশ^াসের সাথে ব্যাট করে নিজ দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ম্যাচসেরা ইমাদ ৫৪ বলে পাঁচটি বাউন্ডারিতে করেন অপরাজিত ৪৯ রান। আফগান ছোবল থেকে ৯২’র চ্যাম্পিয়নদের কক্ষপথে রাখতে বোলার ৗয়াহাব রিয়াজের অবদানও বিশাল- ৯ বলে এক চার, এক ছক্কায় অপরাজিত ১৫ রান।
মোহাম্মদ নবী ১০ ওভারে ২৩ রান দিয়ে পান দুটি উইকেট। হামিদ হাসান ২ ওভারে ১৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। গুলবাদিন নাইব ৯.৪ ওভারে ৭৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মুজিব উর রহমান ১০ ওভারে ৩৪ রানে নেন দুটি উইকেট। রশিদ খান ১০ ওভারে ৫১ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ৮ ওভারে ৩২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি।
আফগানিস্তানের প্রথম আট ব্যাটসম্যানের সাতজনই পৌঁছান দুই অঙ্কে। তাদের কেউই ইনিংস খুব একটা বড় করতে না পারায় বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি আফগানরা। ৯ উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে ২২৭ রান।
পাকিস্তান ইনিংসেই চিত্রটা ছিল প্রায় একইরকম। তবে স্পিনাররা আরও বেশি সুবিধা পাওয়ায় সরফরাজ আহমেদের দলের জন্য কাজটা ছিল আরও কঠিন। স্পিন পরীক্ষায় উতরে গিয়ে চার নম্বরে উঠে এসেছে পাকিস্তান। ৮ ম্যাচে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের পয়েন্ট ৯। আটটি ম্যাচই হারল আফগানিস্তান।
উইকেট এমনিতে মন্থর।
সুবিধা পেয়েছেন স্পিনাররা। শুরুতে কিছুটা আদ্রতা ছিল উইকেটে। সেটা কাজে লাগিয়ে আফগানদের কাঁপিয়ে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। পরপর দুই বলে বিদায় করেন গুলবাদিন নাইব ও হাশমতউল�াহ শাহিদিকে। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া আফগানরা শুরুতেই পড়ে যায় চাপে।
এমনতি মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত হলেও এদিন শুরু থেকে শট খেলছিলেন রহমত শাহ। বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমের দ্রæত গতির এক ডেলিভারিতে শর্ট কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি।
এরপরই নিজেদের সেরা জুটি পায় আফগানিস্তান। প্রমোশন পেয়ে চার নামা ইকরাম আলি খিলকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন আসগর আফগান। সাবেক এই অধিনায়ক ক্রিজে গিয়েই চড়াও হন বোলারদের ওপর। বেশি আক্রমণাত্মক খেলাটাই কাল হয় তার জন্য। লেগ স্পিনার শাদাব খানকে বেরিয়ে গিয়ে ওড়ানোর চেষ্টায় ফিরেন বোল্ড হয়ে। ভাঙে ৬৪ রানের জুটি।
এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি আফগানিস্তান। সাত নম্বরে নেমে রানের গতিতে দম দেওয়া নাজিবউল্লাহ জাদরানকে বোল্ড করে থামান আফ্রিদি। রশিদ খানকে পরে দারুণ এক স্লোয়ারে বিদায় করেন তিনি। ৪৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার বাঁহাতি এই পেসার।