ইভিএম হলে রাতে বাক্স ভর্তি করার সুযোগ নেই

43

যারা নির্বাচনে অনিয়ম করে, তাদের ‘শিক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা’ নির্বাচন কমিশনের নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট চালু হলে আগের রাতেই ব্যালট দিয়ে বাক্স ভরে রাখার সুযোগ বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন।
শুক্রবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ (টিওটি) কর্মশালায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসির এমন বক্তব্য আসে। খবর বিডিনিউজের
ভোটে অনিয়মের প্রসঙ্গ টেনে নূরুল হুদা বলেন, “কারা সেজন্য দায়ী, তাদেরকে কী করা যাবে সেই দীক্ষা-শিক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা যোগ্যতা আমাদের কমিশনের নেই এবং সেভাবে বলারও সুযোগ কোনো নেই যে, কী কারণে হচ্ছে, কাদের কারণে হচ্ছে, কারা দায়ী।”
নাগরিকদের ভোটাধিকার রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে সিইসি বলেন, “সমাজের মধ্যে একটার পর একটা অনিয়ম অনুপ্রবেশ করে, আবার সেটি প্রতিহত করতে একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। “নির্বাচনের সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে আশা করি। আগামীতে ভোটে ইভিএম শুরু করে দেব, তাহলে সেখানে আর রাতে বাক্স ভর্তি করার সুযোগ থাকবে না।”
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনিয়মের প্রবণতা এবং তা ঠেকাতে নতুন নতুন পদ্ধতি প্রবর্তনের কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, ভোট এক সময় টালি পদ্ধতিতে হত। সামনে প্রার্থীরা থাকতেন, ভোটাররা এসে কাকে ভোট দেবেন জানালে টালি করা হত। “এক সময় গোপন ব্যালট এল। আবার ১১ বছরের শিশুরাও ভোটার হল, মৃত লোকও ভোটার হল। এরপর ছবিসহ ভোটার তালিকা হল। নানা রকম অসাধু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজনের ভোট আরেকজন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ধরনের জালিয়াতি প্রতিহত করতে আবার একটি আইন বা নিয়ম তৈরি হয়।”
ভোটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরে নূরুল হুদা বলেন, “সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় শেষ পর্যায়ের ব্যবস্থা এটা। সেনাবাহিনীকে অভ্যন্তরীণ ছোটখাটো বিষয়ে মোতায়েন করার কথা নয়। পরিবেশ পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে। এজন্যে আইন-আচরণবিধি করতে হচ্ছে, কঠোর অবস্থায় যেতে হচ্ছে। তবুও সামাল দেওয়া যায় না।”
অনিয়ম সামাল দিতে ইসির দায়িত্ব ও করণীয় বিষয়ে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন সিইসি। তিনি বলেন, “ভোটাধিকার রক্ষায় যে অবস্থায় আমরা রয়েছি- হাল ছেড়ে দিলে হবে না, যে যেখানে রয়েছে সেখান থেকেই প্রচেষ্টা নিতে হবে। আমরা সবাই মিলে দেখবে। একদিন উন্নতি হবে, অন্যান্য দেশে যেভাবে হয়েছে।”
নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “আপনারা দেখিয়ে দিন সঠিক নির্বাচন কাকে বলে। সবাই সচেতন হলে আশা করি একদিন আসবে যেখানে ভোটে পুলিশও লাগবে না।”
জ্ঞানে, দক্ষতায় ও ব্যক্তিত্বে নির্বাচন পরিচালনার সক্ষমতা তৈরি হলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারাই সব নির্বাচনে দায়িত্ব পালন কতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন সিইসি।