ইতিবাচক রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে হবে তরুণদের

50

তরুণ প্রজন্মকে ইতিবাচক রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখার আহব্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। গত শুক্রবার বিকেলে দৃষ্টি চট্টগ্রামের আয়োজনে এক আড্ডায় এমন আহব্বান জানান তিনি। দৃষ্টি চট্টগ্রাম তাদের মেহেদীবাগের কার্যালয়ে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তরুণদের নিয়ে রাজনীতিক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে এ আড্ডার আয়োজন করে।
আড্ডায় বাংলাদেশের অতীত রাজনীতি, বর্তমান অবস্থা, সমাজ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল ইসলাম।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে ইতিবাচক রাজনীতিতে তরুণদের সম্পৃক্ততা কমে যাচ্ছে। এর জন্য তরুণরা দায়ী নয়, আমাদের রাজনীতিবিদরাও দায়ী। তরুণদের অন্তদৃষ্টি জাগিয়ে ইতিবাচক রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত। আমাদের হতাশ হলে চলবে না।’
বর্তমান সমাজের পেক্ষাপটে বিভিন্ন অপরচুনিস্ট (সুবিধাবাদী) নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে অনেকে বিএনপিতে যায়। আবার বিএনপি থেকে জিততে পারবে না এমন মনে করে আওয়ামী লীগে আসে। এমন অপরচুনিস্টদের নিয়ে আমাদের বসবাস।’ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের উচিত অপরচুনিস্টদের কঠোর হস্তে দমন করা। কিন্তু অনেক সময় পারা যায় না। তবে আমাদের হতাশ হলে চলবে না। এগুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্য নিজের সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দিতে অনৈতিক আশ্রয় নেন। কন্ডিশন শিথিল করে নিয়োগ দেন। তিনি তো রাজনীতি করেন না।’ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে কেন তদবির করতে হবে! যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হচ্ছেন না, যিনি এমপি হচ্ছেন না বা যিনি মন্ত্রী হচ্ছেন না তিনি কি এ সমাজে সম্মান নিয়ে বেঁচে নেই। আমাদের সবচেয়ে বড় সংকট এ জায়গায়, আমাদের মধ্যে আত্ম উপলব্ধি নেই। এটাই সমাজের সিনারিও।’
বাবার দেওয়া দুইটি শর্তে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পারিবারিক অনুমতি পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদ বাবার ইচ্ছা ছিল আমি বাবার ব্যবসার হাল ধরি। কিন্তু আমি বাবাকে বলেছিলাম-আপনার আরও ছেলে আছে তাদের বলুন, আমাকে রাজনীতি করতে দিন। তখন বাবা আমাকে দুইটি শর্তে রাজনীতি করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কখনও মিথ্যা কথা না বলা ও কোথাও গেলে বাবাকে বলে যাওয়া-এই দুইটি ছিল শর্ত।’আমিনুল ইসলাম, ‘আমি বাবার শর্ত মেনে নিয়ে এবং পারিবারিক সাপোর্ট নিয়ে রাজনীতিতে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে এখনও রাজনীতিতে যুক্ত আছি।’ ছোটবেলায় ফুটবল খেলার প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় ফুটবলের প্রতি আসক্ত ছিলাম। ফুটবল খেলতাম। আবাহনী ও মোহামেডানের খেলা হলে বন্ধুদের নিয়ে খেলা দেখতে চলে যেতাম। আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটবল খেলার কারণে মায়ের বকা খেয়েছি অনেক। কিন্তু রাজনীতিতে বেশি জড়িয়ে পড়ায় ধীরে ধীরে ফুটবল খেলা থেকে দূরে সরে গেছি।’
দৃষ্টি চট্টগ্রামের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট মিলি চৌধুরী সঞ্চালনায় আড্ডায় অংশ নেন চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি মাসুদ বকুল, সাবেক সভাপতি শেহজাদ হক, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. আদনান মান্নান, সাধারণ সম্পাদক সাবের শাহ ও যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুন্নাসহ দৃষ্টি চট্টগ্রামের সদস্যরা। বাংলানিউজ