আ. লীগ নেতারা কে কোথায় ঈদ করবেন

146

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। প্রতিবছর ঈদকে উপলক্ষ করে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে প্রচুর। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বড় বড় রাজনীতিবিদদের কাছেও ঈদ হয়ে আসে আনন্দের উপলক্ষ। পরিবার-পরিজনের পাশাপাশি নেতারা সাধারণ মানুষের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও খাওয়া-দাওয়া করে দিনটি পার করবেন। এবার চট্টগ্রামের নেতারা যেখানেই থাকবেন সেখানে নেতাকর্মী ও স্বজনদের ঘিরেই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি প্রতিবারের মতো এবারো নির্বাচনী এলাকা মিরসরাইয়ে ঈদ উদযাপন করবেন। নিজ বাড়ি ধুম ইউনিয়নের শান্তিরহাট মাদ্রাসার ঈদগাহ প্রাঙ্গণে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। সারাদিন বাড়িতে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে ঈদ পালন করবেন। ঈদের আগের দিনই তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যাবেন। গত ১৫ বছর ধরে তিনি একই নিয়মে ঈদ উৎসব পালন করছেন। ঈদের দিন গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায় শেষে নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করবেন। ঈদের দিন রাতে অথবা পরদিন শহরের চলে আসবেন বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে বোয়ালখালীর কধুরখীলে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। সেখানেই সাধারণ মানুষসহ দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। প্রতিবারের মতো এবারো গ্রামের বাড়িতেই করা হয়েছে অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা। ঈদের পরদিনও গ্রামের বাড়িতেই কাটাবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এ নেতা।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি প্রতিবারের মতো এবারো রাউজানের গহিরায় নিজবাড়িতে ঈদ উৎসব পালন করবেন। তিনি বলেন, ‘সারাদিন কর্মীদের সাথে বাড়িতে থাকবো। সবার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করবো। আমি সবসময় বাড়িতেই নামাজ আদায় করি। যে যেখানেই থাকি বাড়িতেই চলে আসি। অতিথিদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা রাখবো। ঈদে আমার বাড়ি থেকে কেউ খালী মুখে যেতে পারবে না। আমি উত্তর জেলা ও রাউজানের সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ঈদ আনন্দে সামিল হবেন স্বজন-নেতাকর্মীদের সাথে। সকালে নির্বাচনী এলাকা আনোয়ারা উপজেলার হাইলধরের নিজ বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। পরে বাবার কবর জিয়ারতের মধ্যদিয়ে দিনের ঈদের ব্যস্ততা শুরু হবে মন্ত্রীর। দুপুর পর্যন্ত সেখানে স্বজন ও নেতাকর্মীদের সময় দিয়ে বিকালে নগরীর সার্সন রোড়ের বাসভবনে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী জামিয়তুল ফালাহ মসজিদে নামাজ আদায় শেষে পিতা জহুর আহমদ চৌধুরীর কবর জিয়ারত করবেন। সেখান থেকে দামপাড়ার বাসায় ফিরে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় করবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল পিতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো সকল নিয়ম অনুসরণ করেই এবার ঈদ উদ্যাপনের ঘোষণা দিয়েছেন। জামিয়াতুল ফালহ মসজিদে নামাজ আদায় শেষে বাসায় ফিরে বাবার কবর জিয়ারত করবেন। পরে নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করবেন। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের জন্য প্রতিবছরের মতো ঐতিহ্যবাহী মেজবান থাকবে। সাথে পোলাও, কোরমা ও সেমাই থাকবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ঈদের দিন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। সেখান থেকে ফিরেই কদমমোবারক মসজিদে পূর্ব পুরুষদের কবর জিয়ারত করবেন। পরে বাসায় ফিরে মা ও বড়জনদের সালাম করবেন। সেখানেই নেতাকর্মী, আত্মীয়স্বজনদের জন্য নানা পদের খাবারের আয়োজন থাকবে। সারাদিন অতিথিদের আপ্যায়নের মাধ্যমেই ঈদের খুশি ভাগাভাগি করবেন তিনি।
হাটহাজারীর শিকারপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করবেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম। তিনি ঈদের দিন সকালেই নিজ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিবেন। নামাজ আদায় শেষে নেতাকর্মীদের সাথে নিজ বাড়িতে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন এবং নেতাকর্মীদের নানা পদের বাহারি খাবারে আপ্যায়ন করবেন। রাতে পুনরায় শহরের বাসায় ফিরে আসবেন। পরদিন সকাল থেকে শহরের বাসায় নেতাকর্মীদের সাথে আবারো শুভেচ্ছা বিনিময় করে এবারের ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করবেন তিনি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ঈদের টানা তিনদিন সাতকানিয়ার গ্রামের বাড়িতেই কাটাবেন। সেখানে ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় শেষে মুরব্বিদের কবর জিয়ারত করবেন তিনি। পরে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। তৃতীয় দিন সাতকানিয়া থেকে শহরের বাসায় ফিরবেন তিনি।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বরাবরের মতো এবারো ঈদ পালন করবেন সাতকানিয়ার খাগরিয়া গ্রামে। সেখানেই নামাজ আদায় শেষে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করবেন। ঈদের আমেজ না কাটা পর্যন্ত গ্রামের বাড়িতেই অবস্থান করবেন তিনি। একইভাবে বিভিন্ন সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্যরাও নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন।
শীর্ষ নেতারা ছাড়াও সকল সংসদ সদস্যদের কাছেও এবারের ঈদে বাড়তি আনন্দ থাকবে। নির্বাচনের পর এবারই প্রথমবারের মতো ঈদে নেতাকর্মীদের কাছে যাবেন নেতারা। একইসাথে বিভিন্ন উপজেলা থেকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানরাও নেতাকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় করবেন। নির্বাচিত সকল জনপ্রতিনিধি এবারের ঈদে নির্বাচনী এলাকায় সময় দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। অনেকেই ঈদকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ঈদ উপহার। সবমিলিয়ে এবারের ঈদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে বাড়তি উচ্ছ¡াস ও আনন্দ বয়ে আনবে।