আ. লীগ নেতাকে অপহরণ

44

বান্দরবান সদর উপজেলার উজি হেডম্যান পাড়া থেকে বান্দরবান পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি ও ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার চথোয়াই মং মার্মাকে অপহরণ করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। গত বুধবার রাত ১০ টার দিকে উজি হেডম্যান পাড়ার বাগান বাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনার পর তাকে উদ্ধারের জন্য অভিযানে নেমেছে যৌথবাহিনী।
ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় জেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশের পূর্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চে এসে শেষ হয় এবং পরে একই স্থানে সমাবেশ করেন। সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী, সহ-সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, যুগ্ম সম্পাদক ল²ীপদ দাশসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি কুচক্রী মহল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে আওয়ামী লীগ শূন্য করার জন্য পাঁয়তারা করছে। গত এক মাসে বান্দরবানে চারটি ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। এরমধ্যে তিনটি হত্যা এবং দুইটি অপহরণের মতো ঘটনা ঘটেছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপ জনসংহতি সমিতির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে পার্বত্যাঞ্চলে চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম, খুন এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের জনগণ যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে তার জন্য দ্রুত পাহাড়ে চিরুণী অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ দুষ্টুচক্রগুলোকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য জেএসএস ও মগ বাহিনীর দ্বন্দ্ব পাহাড়ে একের পর এক হত্যা, অপহরণের ঘটনা ঘটে চলেছে। এ পর্যন্ত গত ১৫ দিনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেএসএস এর ২ জনকে হত্যা ও ১ জনকে অপহরণের দাবি করেছে তারা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ১ জনকে হত্যা ও ১ জনকে অপহরণের দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতারা নানান কর্মসূচি পালন করেছে। এনিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে পাহাড়ের মানুষের। অনেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বান্দরবানে কোনো সন্ত্রাসীর স্থান হবে না : পুলিশ সুপার
বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নে সম্প্রতি খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদারের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে পুলিশ বান্দরবান সদরের রাজবিলা ইউনিয়নের ২ ও ৩নং রাবার বাগান, বুড়িপাড়া ও কুহালং ইউনিয়নের উজি হেডম্যান পাড়া, চড়ুই পাড়া, হেব্রণ পাড়াসহ বিভিন্ন বাড়ি ও দূর্গম পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে অভিযানিক দল।
অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় পুলিশ সুপার স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং সন্ত্রাসীদের কোনো তথ্য থাকলে পুলিশকে জানানোর আহবান জানান।
অভিযানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ওসি (তদন্ত) এনামুল হক ভূঁইয়াসহ পুলিশের অর্ধ শতাধিক সদস্য এই অভিযানে অংশ নেয়।
অভিযান শেষে পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, কোনো সন্ত্রাসীর স্থান বান্দরবানে হবে না। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমাদের চলমান এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

থানচিতে সড়ক
দুর্ঘটনায় পুলিশসহ
আহত ৩
বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৩ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে থানচি ডিম পাহাড় ২৬ কিলোমিটার নামক এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহতরা হলেন ২৬ কিলোমিটার পুলিশ ক্যাম্পের এসআই সাইফুল ইসলাম, কনস্টেবল আল আমিন। তবে মোটর সাইকেল চালকের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
থানচি থানার অফিসার ইনচার্জ জোবাইরুল হক জানান, লামা থানার নিয়ন্ত্রণাধীন ২৬ কিলোমিটার এলাকার পুলিশ ক্যাম্পের একজন এসআই ও একজন কনস্টেবল মোটরসাইকেলযোগে থানচি সদরে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।