আ.ফ.ম. মোদাচ্ছের আলী ‘দেশের ছড়া, দশের ছড়া’য় জাগরণের মন্ত্রণা

129

মানবশিশুর প্রথম শিক্ষাটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুরু হয় ছড়া দিয়ে। মজার কোনো ছড়া দিয়ে মায়েরা শিশুদের প্রথম পাঠ দেন, ছড়ার ছন্দে ছন্দে শিশুর হৃদয় দোলে উঠে। সুতরাং, শৈশবেই ছড়ার প্রতি মানবের ভালোবাসা তৈরি হয়ে যায় অবচেতন মনেই। শৈশব পেরিয়ে কৈশোর কিংবা পরিপূর্ণ বয়সেও তাই মানুষ যখনই ছড়ার ছন্দ খুঁজে পায়-অবচেতন মনেই সে দোলে উঠে ছন্দে ছন্দে। এ কারণে ছড়া সাহিত্যও হয়ে উঠেছে বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ ও অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ছড়ালেখকরা সৃষ্টির ছন্দে ছন্দে শৈশবকে দোলা দেন, কৈশোরকে মুগ্ধ করেন, তারুণ্যকে নাড়া দেন-তাদের সুকুমার বৃত্তি জাগিয়ে তোলেন।
এবার অমর একুশে বইমেলায় বিশিষ্ট ছড়াকার আ.ফ.ম. মোদাচ্ছের আলীর ‘দেশের ছড়া, দশের ছড়া’ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ছড়াকার ছন্দে ছন্দে দেশমাতৃকা, মানবতা কিংবা সংসারের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাগরণের মন্ত্রণা দিয়েছেন।
‘হও সচেতন হে বাঙালি’ নামক ছড়ায় তিনি লিখেছেন-
উৎসাহটা অনেক তোমার
সবকিছুতে জড়ো হও
জানো নাতো তুমি সুজন
সকল কাজে কাজি নও।
আগ্রহরা বেশি তোমার
কাজের বেলায় পিছুটান,
লক্ষ হাজার তোমার জন্য
যেতে পারে অজুত প্রাণ।
লাগলে আগুন কাজটা আগে
দমকলেতে খবর দাও
ওদের কর্ম করতে দিয়ে
দূরে তুমি সরে যাও।
আ.ফ.ম. মোদাচ্ছের আলী এই গ্রন্থটির প্রতিটি ছড়ায় এ রকম সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। ছন্দে ছন্দে করেছেন অন্যায়ের প্রতিবাদ, কোথায় কি করা উচিত কিংবা উচিত নয় সেটিও মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন ছড়ার মাধ্যমে।
বইটি সম্পর্কে আ.ফ.ম. মোদাচ্ছের আলী বলেন, ‘দেশের ছড়া দশের ছড়া’ (শিল্পির তুলিতে ১০ এর ছড়া) গ্রন্থটিতে লেখা ছড়াগুলো আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংকট ও সম্ভাবনার সময়ে লিখেছি। ফেসবুকে পোস্ট করেছি। লাইক-কমেন্ট পেয়েছি। লিখেছি বিভিন্ন দিবস নিয়ে। এবার মুদ্রিত ছড়াগুলো সচেতন পাঠকের জন্য তুলে ধরেছি। আশা করছি পাঠকদের ছড়াগুলো ভালো লাগবে।
এবার লেখক সম্পর্কে একটু জানিয়ে দিই। আ.ফ.ম. মোদাচ্ছের আলীর জন্ম পটিয়া উপজেলার বরলিয়ায়। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির হাতেখড়ি তার। আশির দশক থেকেই পত্রপত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি গ্রূপ থিয়েটারের সাথে সম্পৃক্ত, পাশাপাশি লেখালেখিও চালিয়ে আসছেন। মা, মাটি, মাতৃভূমি, মাতৃভাষা ও মানুষ তার লেখার মূল উপজীব্য।