আসুন, সবাই মিলে সোনার বাংলা গড়ি

98

একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সবাই মিলে বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একুশে পদক প্রদান-২০১৯ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করা। একুশ আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করা যায়, নিজের মাতৃভাষাকে রক্ষা করা যায়। সাথে সাথে নিজের সংস্কৃতি, শিক্ষা, ঐতিহ্য সবকিছুকেই রক্ষা করা ও তার মর্যাদা দেওয়া যায়। আসুন, আমাদের মাতৃভূমিকে আমরা গড়ে তুলি। আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য নিয়ে বিশ্বে যেন অনন্য মর্যাদা নিয়ে চলতে পারি। স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা দেশ গড়তে পারি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এবারের একুশে পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তাদের হাতে পুরষ্কার ও সনদ তুলে দেন। খবর বিডিনিউজের
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এবার একুশে পদক পেয়েছেন ২১ জন। তারা হলেন- গোলাম আরিফ টিপু, অধ্যাপক হালিমা খাতুন (মরণোত্তর), অধ্যাপক মনোয়ারা ইসলাম, ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য, শিল্পী আজম খান (মরণোত্তর), খায়রুল আনাম শাকিল, সুবীর নন্দী, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, লাকী ইনাম, লিয়াকত আলী লাকী, আলোকচিত্রী সাইদা খানম, চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ ও মাহবুবুল হক, প্রণব কুমার বড়ুয়া, কথাসাহিত্যিক রিজিয়া রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, মইনুল আহসান সাবের ও হরিশংকর জলদাস, কবি অসীম সাহা, আনোয়ারা সৈয়দ হক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যারা বিভিন্ন সময় অবদান রেখে গেছেন, আমাদের শিল্প-সাহিত্য, কলা, সংস্কৃতির সকল ক্ষেত্রে, তাদেরকে আমরা সম্মান দিয়েছি। আমরা মনে করি সম্মানটা মূলত দেশের জন্য, জাতির জন্য এবং ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। তাদের জীবনটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই পুরস্কার।
বাংলাদেশের ইতিহাসের নানা পর্বে আওয়ামী লীগের অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি এইটুকু বলব বাংলাদেশের মানুষের যা কিছু অর্জন সেই অর্জনটুকু কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এনে দিয়েছে। আজ বিশ্বজুড়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। শুধু এই অর্জনটা না, মাতৃভাষাকে রক্ষা করা, মাতৃভাষাকে চর্চা করা, মাতৃভাষার উপর গবেষণা করার জন্য আমরা তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা একটা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল কফি আনান আমার আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছিলেন। আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তরের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। পরবর্তীতে বিএনপি-জামাত জোট সরকারে এসে যথারীতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সরকারে এসে মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট নির্মাণের কাজ আমরা শেষ করি।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পদক নিলেন চট্টগ্রামের ৩ বিশিষ্ট ব্যক্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা, মুক্তিযুদ্ধ, গবেষণা, শিক্ষা, ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য চট্টগ্রামের তিন বিশিষ্ট ব্যক্তি গতকাল বুধবার একুশে পদক গ্রহণ করেছেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে তারা এ পদক গ্রহণ করেন। এ তিন বিশিষ্ট ব্যক্তি হলেন ড. মাহবুবুল হক, ডক্টর প্রণব কুমার বড়ুয়া ও অধ্যাপক হরিশংকর জলদাস।
একুশে পদক পাওয়া গুণীজনদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যারা একুশে পদক পেয়েছেন তারা আমাদের গুণীজন। তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে কীর্তিমান। দেশ ও জাতির জন্য তাদের বিশাল অবদান রয়েছে, সেই অবদানের কথা সব সময় আমরা স্মরণ করি।
এছাড়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কীর্তিমানদের জীবন অনুসরণ করে নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহবান জানান।