আরও ৫০ হাজার পিপিই বানাচ্ছে স্মার্ট জ্যাকেট

103

রাহুল দাশ নয়ন
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় চিকিৎসকদের জন্য আরও ৫০ হাজার পারসোনাল প্রটেকশন ইক্যুপমেন্ট (পিপিই) বানানোর কার্যাদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত শনিবার চট্টগ্রাম ইপিজেডের স্মার্ট জ্যাকেট (বিডি) লিমিটেড নামক পোশাক কারখানাকে এসব পিপিই বানানোর কার্যাদেশ দেয়া হয়। এ নিয়ে দুই চালানে দেড় লক্ষ পিপিই তৈরির কার্যাদেশ পেল চট্টগ্রামের স্মার্ট গ্রূপের এই অঙ্গ প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে প্রথম ধাপে এক লক্ষ পিপিই তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়।
স্মার্ট গ্রূপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান সিআইপি পূর্বদেশকে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে প্রস্তাব আসলে দেশের সংকটকালীন অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে পিপিই তৈরির উদ্যোগ নিই। বিদেশী বায়ারের অর্ডার বাতিল করে দেশের চিকিৎসকদের জন্য প্রথম ধাপে এক লক্ষ পিপিই তৈরি করা হয়। এসব পিপিই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানোর পর তাঁরা সন্তুষ্ট হয়ে আরো ৫০ হাজার পিপিই তৈরির কার্যাদেশ দিয়েছেন।’
কারখানা সূত্র জানায়, প্রথম ধাপে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ঔষধালয়ের পরিচালক (ভান্ডার ও সরবরাহ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ পৃথক দুটি কার্যাদেশে এক লক্ষ পিপিই তৈরির অনুমোদন দেন। পরে গত ২৮ মার্চ দ্বিতীয় চালানে আবারো ৫০ হাজার পিপিই তৈরিতে স্মার্ট জ্যাকেট (বিডি) লিমিটেডকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় সকল পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষনা করা হলেও বিশেষ নিরাপত্তায় এই পোশাক কারখানার পিপিই ইউনিট পরিচালিত হচ্ছে। সংকটকালীন মুহূর্তে সরকারের চাহিদা মোতাবেক দ্রুত সময়ের মধ্যে পিপিই সরবরাহ করতে এই প্রতিষ্ঠানের মালিক, উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। বর্তমানে এ কারখানার চতুর্থ তলায় ১৩টি লাইনে সাত শতাধিক শ্রমিক পিপিই তৈরির কাজ করছেন। এই পোশাক কারখানার শ্রমিকরাও দেশের সংকটকালীন অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বন্ধের দিনেও কর্মস্থলে উপস্থিত আছেন। এজন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের জন্য সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসায় পৌঁছে যাতে শ্রমিকদের রান্না করতে না হয় সেজন্য হাতে রাতের খাবারও তুলে দেয়া কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্মার্ট জ্যাকেট লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) বিপ্লব কুমার মজুমদার পূর্বদেশকে বলেন, ‘প্রথম চালানের এক লক্ষ পিপিই তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। আরো ৫০ হাজার পিপিই তৈরির কার্যাদেশ পেয়েছি। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় চালানের পিপিইগুলো তৈরি কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম চালানের ১০ হাজার ও দ্বিতীয় চালানের আরো কিছু পিপিই মিলিয়ে একটি চালান ঢাকায় পাঠানো হবে। আমরা দুদিন পরপর ১৫ থেকে ১৬ হাজার পিপিই ঢাকায় পাঠানোর চেষ্টা করছি। সরকারের পক্ষ থেকে কারখানা চালাতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্ধের দিনেও কাজে থাকায় খাবার, ওভারটাইম দিয়ে শ্রমিকদের পাশে আছেন কারখানার মালিকপক্ষ।’
কারখানা ম্যানেজার ছোটন দাশ পূর্বদেশকে বলেন, ‘শ্রমিকরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সহিত পিপিই তৈরি করছেন। এসব পিপিই দেশের স্বার্থে চিকিৎসকরা ব্যবহার করবেন জেনে শ্রমিকরাও খুশি। আমরা যারা এ কারখানায় চাকরি করি সবার জন্য এটি গৌরবের।’