আরও সড়ক কাটবে ওয়াসা মুক্তি নেই নগরবাসীর

46

খোঁড়াখুঁড়ির কারণে দুর্ভোগ থেকে সহসা মুক্তি পাচ্ছে না নগরবাসী। পাইপলাইন স্থাপনের জন্য আরও অন্তত ২০টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কাটবে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এর মধ্যে কর্ণফুলি পানি সরবরাহ প্রকল্পে (ফেইজ-২) আওতায় এখনো ১৬টি সড়ক কাটা বাকি। যেগুলো নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নীতকরণ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় বহদ্দারহাট থেকে কাস্টমস মোড় পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে ৬ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। সেদিকেও ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, বহদ্দারহাট থেকে মুরাদপুর ঘুরে পাঁচলাইশ থেকে অলি খাঁ মসজিদ হয়ে গনি বেকারি মোড়, সেখান থেকে জামালখান-চেরাগি পাহাড় আন্দরকিল্লা ঘুরে কাটা পাহাড় হয়ে বোস ব্রাদার্স থেকে থিয়েটার ইনস্টিটিউট হয়ে নিউ মার্কেট মোড়, ওখান থেকে সদরঘাট রোড হয়ে বারিক বিল্ডিং থেকে কাস্টমস মোড় পর্যন্ত ৪৮ ইঞ্চির ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। খবর বাংলানিউজের
সরেজমিনে দেখা যায়, গনি বেকারি থেকে জামালখান পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই অংশে খাস্তগীর-আইডিয়্যাল স্কুলসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম-মহসীন কলেজসহ চকবাজার ঘিরে গড়ে উঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু সড়কটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবহারকারীরা। বিকল্প হিসেবে কেবি আবদুস সত্তার সড়কটি ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সেটি সরু হওয়ায় যানজট লেগেই থাকছে।
অন্যদিকে কর্ণফুলি পানি সরবরাহ প্রকল্পের (ফেইজ-২) এর আওতায় সার্সন রোড থেকে চট্টেশ্বরি হয়ে গুলজার মোড় পর্যন্ত খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। ফলে বিকল্প সড়কও ব্যবহার করতে গিয়েও ভোগান্তি হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, সমন্বয় না করে ওয়াসা রাস্তা কাটছে। খোদ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এ অভিযোগ করছে। তবে ওয়াসার দাবি, সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিয়ে রাস্তা কাটা হচ্ছে। চকবাজার দেব পাহাড় মোড়ের বাসিন্দা আমানত আলী বলেন, আগে গনি বেকারি হয়ে জামালখান দিয়ে গাড়ি যেতো। এখন কেবি আবদুস সত্তার রোড হয়ে চেরাগি পাহাড় মোড় ঘুরে আবার জামালাখান দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। তবে সেদিকে প্রচন্ড যানজট। ৫ মিনিটের পথ যেতে লাগছে আধঘণ্টা।
আরও যেসব সড়ক কাটা হবে : কর্ণফুলি পানি সরবরাহ প্রকল্পের (ফেইজ-২) আওতায় অন্তত ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কাটা হবে। সেগুলো হচ্ছে হালিশহর এ ব্লকের এক নম্বর রোড, যেটি এলিভেটেড ট্যাংক থেকে আর্টিলারি পর্যন্ত। এ ছাড়া জে বøকের এক নম্বর রোড, আই ব্লকের এক নম্বর রোডও কাটা হবে। কাটা হবে বেপারি পাড়া থেকে চৌমুহনি মোড় পর্যন্ত হালিশহর রোড, বাদামতলি মোড় থেকে সব্দর আলি রোড হয়ে কমার্স কলেজ রোড, অক্সিজেন থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত হাটহাজারী রোড, মুরাদপুর রেল গেট থেকে মোহাম্মদপুর রোড, বাটালি হিল থেকে লালখানবাজার মোড় রোড।
এ ছাড়া টাইগারপাস মোড় থেকে কদমতলী, নিউ মার্কেট থেকে দারোগা হাট পর্যন্ত সদরঘাট রোড, আবার কদমতলী থেকে বাটালি হিল রোড, চৈতন্য গলি রোড হতে জুবলী রোড হয়ে নন্দনকানন রোড, জেসি গুহ রোড হয়ে আবার নন্দনকানন পর্যন্ত, নিউ মার্কেট মোড় থেকে কোতোয়ালী, মহিম দাস রোড হয়ে হারাচন্দ্র মুন্সেফ লেন পর্যন্ত বান্ডেল রোডও কাটা হবে।
ওয়াসার বক্তব্য : ২০২১ সাল পর্যন্ত চলবে খোঁড়াখুঁড়ি। এর মধ্যে বহদ্দারহাট থেকে কাস্টমস মোড় পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপনের জন্য কাটা হবে অসংখ্য সড়কের অংশ। অন্যদিকে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের জন্য নগরে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হবে শিগগির।
চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নীতকরণ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের পরিচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, ১১ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপনের কাজ অর্ধেক শেষ। জানুয়ারিতে পুরো কাজ শেষ। দুর্ভোগ কমাতে ২৪ ঘণ্টা কাজ চালু রাখা হয়েছে।
কর্ণফুলি পানি সরবরাহ প্রকল্পের (ফেইজ-২) উপ-পরিচালক মাকছুদ আলম বলেন, পানিসংকট দূর করতে ওয়াসা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্প কাজ শেষ হলে নগরে কোনো পানি সংকট থাকবে না। তবে কাজের কারণে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। সেটি বিবেচনায় কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি, মেয়াদের আগে কাজ শেষ হবে’।