আরও চারজন গ্রেপ্তার

53

পাহাড়তলীতে ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেল হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল সোমবার ভোরে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে পিতা-পুত্রও রয়েছেন। তবে তাদের নাম মামলার এজাহারে নেই। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রমজান আলী কিরণ (৩০), মো. ইকবাল (২১), মো. লালন (৫০) এবং তার ছেলে শাকিল খান শামীম (১৯)।
সিএমপি’র সহকারি কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) আশিকুর রহমান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট একটি সূত্রে এদের চারজনের হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছি। তাদের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় ওসমান খানসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে মোবারক হোসেন নামে এক আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়া একজন প্রত্যক্ষদর্শীও সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। এদিকে পুলিশী তদন্ত ও দু’জনের জবানবন্দিতে উঠে আসে এটি গণপিটুনি নয়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই সোহেলকে গণপিটুনির নামে হত্যা করা হয়েছে।
সিএমপি’র সহকারি কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) আশিকুর রহমান বলেন, মহিউদ্দিন সোহেল হত্যা মামলার তদন্ত এগিয়ে চলছে। এ হত্যাকান্ড সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এটি কোন গণপিটুনির ঘটনা নয়। এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ হত্যাকান্ড। পুলিশী তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে সোহেলের বিরোধী পক্ষ মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে এ হত্যাকান্ড ঘটনায়।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি সকালে পাহাড়তলী বাজারে কথিত ‘গণপিটুনিতে’ মহিউদ্দিন সোহেলের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পুলিশ ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, চাঁদাবাজীতে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা মিলে মহিউদ্দিন সোহেলকে গণপিটুনি দেয় এবং এতেই তার মৃত্যু হয়। সেসময় পুলিশও জানিয়েছিল, গণপিটুনিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সেটা মানতে রাজি নয় তার পরিবার ও বন্ধুরা। তারা এটাকে হত্যাকান্ড আখ্যায়িত করে তা পূর্বপরিকল্পিত বলে আখ্যায়িত করে আসছিল।
নিহত মহিউদ্দিন সোহেল চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় উপ শিক্ষা ও পাঠ চক্র সম্পাদক ছিলেন। তিনি একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিরও নেতা। এ ঘটনায় পরদিন ৮ জানুয়ারি রাতে মহিউদ্দিন সোহেলের ছোটভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় পাহাড়তলী বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আহবায়ক ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবের আহমদ সওদাগর ও নগর জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ওসমান খানকে ওসমান খানসহ ২৭ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।