আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল ছিলেন নুরুল আলম চৌধুরী

65

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেছেন, নুরুল আলম চৌধুরী ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক নেতা। আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অবিচল ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। আমি তার সাথে দীর্ঘ রাজনীতি করেছি। সুখে-দুখে আমরা একসাথে পথ চলেছি। কখনো নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হয়নি। তার জীবনে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ইতিহাস যুক্ত আছে।
গতকাল শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রদূত মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম চৌধুরীর শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, নুরুল আলম চৌধুরীর মৃত্যুতে চট্টগ্রামবাসী শোকাহত। তিনি কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করায় তাকে জেলে যেতে হয়েছিল। ১৯৮৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদে যান। তিনি মৃত্যুকে ভয় করতেন না। তার বক্তৃতা শোনার জন্য মানুষ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, নুরুল আলম চৌধুরী কর্মী থেকে নেতা হয়েছেন। রাজনীতিকে ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। ২৭ বছর বয়সে সংসদ সদস্য হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সংসদে। তিনি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারতেন। তার সঙ্গে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তাকে হারিয়ে একজন নিবেদিত রাজনীতিককে হারিয়েছি। তার কাছ থেকে নতুন রাজনীতিকদের অনেক কিছু শেখার আছে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেন, প্রবীণ রাজনীতিক নুরুল আলম চৌধুরী ছিলেন সৎ, সাহসী ও ত্যাগী। আমার বাবার সঙ্গে ১৯৮৬ সালে সংসদে ছিলেন। পারিবারিক সম্পর্ক ছিল আমাদের। তিনি মানুষের কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, নুরুল আলম চৌধুরী আমাদের অহংকার। ইচ্ছে করলে মানুষ ক্ষমতার জন্য আদর্শের সঙ্গে আপস করে। কিন্তু নুরুল আলম চৌধুরী ছিলেন আপাদমস্তক রাজনীতিক।নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নীতির প্রশ্নে আদর্শিক যোদ্ধা ছিলেন নুরুল আলম চৌধুরী। সুবিধাবাদী ছিলেন না। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যার প্রশ্নে কোনো আপস করেননি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ছিল তার।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি বলেন, নুরুল আলম চৌধুরী আদর্শের প্রশ্নে পিছপা হননি। আমি শৈশব থেকে তাকে বাবার সঙ্গে দেখেছি। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তার জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম, ফটিকছড়ি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভাÐারী, নুরুল আলম চৌধুরী বড় ছেলে রাহাত জিসান, ছোট ছেলে হাসিবুন সুহাদ সাকিব। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি স্মারক গ্রন্থ করার ঘোষণা দেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম।