আমিরের সঙ্গে অভিনয়ের প্রস্তাব ফেরালেন অঙ্কুশ, কেন?

45

বলিউডের সুপারস্টার আমির খান। তার ছবিতে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে থাকেন বলিউডের তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। অথচ আমিরের আগামী ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন পশ্চিম বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা!
বিস্ময় শোনালেও এমনটাই জানিয়েছেন অঙ্কুশ নিজে। সম্প্রতি পশ্চিম বাংলার জনপ্রিয় ইউটিউবার অরিত্রের সঙ্গে আলাপকালে এমন সিক্রেট ফাঁস করেন অঙ্কুশ।
১৪ জুন ‘আড্ডা উইথ অরিত্র, অ্যাপিসোড-১০’-এর অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অঙ্কুশ। সেখানে তিনি পশ্চিম বাংলার ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। বর্তমান সময়ে বাংলা ছবির সংকট, দর্শক খরা, হলের দুরাবস্থাসহ ছবি নির্মাণের বাজেট, গল্প চুরি নিয়ে স্পষ্টভাবে প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
৩০ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে অঙ্কুশকে অরিত্র প্রশ্ন করেন কপি নিয়ে। বলা হয়, বাংলা কমার্শিয়াল চলচ্চিত্রগুলোর বেশির ভাগ এখন তামিল, তেলেগুর কপি। এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও এর যথাযত উত্তর দেন অঙ্কুশ।
শুধু তাই নয়, বলিউডের মতো ইন্ডাস্ট্রিতেও কমার্শিয়াল প্রায় সব ছবিই বিশ্বের কোনো না কোনো ছবির কপি বলেও মন্তব্য করেন কলকাতার এই নায়ক। এরপর নিজের একটি সিক্রেট ফাঁস করে অঙ্কুশ বলেন, বলিউড থেকে তিনি প্রস্তাব পেয়েছিলেন। আর সেটা যেনোতেনো কারো কাছ থেকে নয়, সোজা আমির খানের তরফ থেকে।
হলিউডের ব্লকবাস্টার ছবি ‘ফরেস্ট গাম্প’-এর হিন্দি রিমেক করছেন আমির খান। ছবিতে টম হ্যাংকের চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। আর এই ছবিতে আমিরের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’-এর চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়া হয় অঙ্কুশকে। কিন্তু তিনি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।
এমন সুযোগ পেয়েও কেন প্রস্তাব ফেরালেন অঙ্কুশ? তারও জবাব দেন অরিত্রকে। অঙ্কুশ বলেন, আমাকে ফোন করে জানানো হয় যে ‘ফরেস্ট গাম্প’-এর ফ্রেম টু ফ্রেম কপি হতে যাচ্ছে হিন্দি রিমেকটা, এটাতে তোমার এই চরিত্রে (আমিরের বেস্ট ফ্রেন্ড) অভিনয় করতে হবে। তুমি কি আগ্রহী? এমন প্রশ্নে আমি বলে দিয়েছি, বলিউডে আমি কারো ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’-এর রোলে অভিনয় দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাই না, ছবির লিড কিংবা মাল্টিস্টারকাস্টের একজন হলে প্রস্তাব ফেরাতেন না বলেও জানান তিনি।
এরপর অঙ্কুশ বলেন, বলিউডের একজন সুপারস্টারকেও হলিউডের আরেকটা ছবির ফ্রেম টু ফ্রেম কপি করতে হচ্ছে। এর পেছনে যুক্তিও আছে। সিনেমার অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে লেখার জন্য যে মানুষ ও সময় দরকার, তা বলিউডেও নেই এবং বাংলাতেও নেই। অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে’র জন্য অপেক্ষা করলে চাহিদা মোতাবেক বছরে যতো ছবি দরকার, তা সম্ভব নয়। বাংলার সব হল বন্ধ হয়ে যাবে।
ভিডিওতে অঙ্কুশ বাঙালি দর্শকের ‘হিপোক্রেসি’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ ভারতীয় দর্শকের আন্তরিকতা ও ভালোবাসার কারণে তামিল, তেলেগু কিংবা মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রি বলিউডকেও কখনো কখনো টেক্কা দিচ্ছে। বক্স অফিসে প্রায় সব ছবিই হিট করছে।
অথচ বাংলা ছবি নিয়ে পশ্চিম বাংলার দর্শকদের নাক সিঁটকানো মনোভাব ও হীনমন্মতার কারণে বাংলার ইন্ডাস্ট্রি দিন দিন ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে।