আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখর তুরাগতীর

100

আখেরি মোনাজাতে দেশ-জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনায় শেষ হলো টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। গতকাল রোববার বেলা ১১টার পর শুরু হওয়া এই মোনাজাতে অংশ নেন লাখো মুসল্লি। এসময় ‘আমিন’, ‘আমিন’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দান।
বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের প্রধান মারকাজ কাকরাইলের মুরুব্বি হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমদের অনুসারীদের অংশগ্রহণে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে গতকাল রোববার এই আখেরি মোনাজাতে অংশ নেয় লাখো মানুষ। মাওলানা জোবায়ের নিজেই মোনাজাত পরিচালনা করেন।
দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের অংশগ্রহণে ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার মধ্য দিয়ে শেষ হবে তাবলিগ জামাতের এই বার্ষিক বিশ্ব সম্মিলন।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ভোর থেকেই দূর দূরান্ত থেকে টঙ্গীতে আতে শুরু করে মানুষ। যানবাহন না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে ইজতেমা মাঠে পৌঁছান।
ফজরের নামাজের পর হেদায়েতি বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। আখেরি মোনাজাতের আগে ভারতের মাওলানা ইবরাহিম দেওলা করেন বিশেষ বয়ান।
সব শেষে বেলা ১১টা ৮ মিনিটে বাংলাদেশের মাওলানা মো. জোবায়ের আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত শুরু করেন। প্রথম ১৮ মিনিট আরবিতে এবং শেষ ২০ মিনিট বাংলায় মোনাজাত করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের
আখেরি মোনাজাতের আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ময়দানের আশপাশের অলি-গলি, রাস্তা, পাশের বাসাবাড়ি, কল-কারখানা ছাদ, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়েও অনেকে মোনাজাতে হাত তোলেন।
পুরুষদের পাশপাশি নারীদেরও ইজতেমা ময়দান ও আশেপাশে সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে শামিল হতে দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্যায়ের আখেরি মোনাজাতে শামিল হন বলে তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেল এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ইজতেমা মাঠ থেকেই মোনাজাতে অংশ নেন।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে রোববার ভোর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এয়ারপোর্ট থেকে জয়দবেপুর চৌরাস্তা, ঢাকা-সিলেট সড়কের গাজীপুর সদরের মীরের বাজার থেকে টঙ্গী ও আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়কের আব্দুল্লাহপুর থেকে বাইপাস সড়ক পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। মোনাজাত শেষে আবার যান চলাচল শুরু হয়।
টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ আশপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান এবং অফিসও আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বন্ধ ছিল।
বরাবরের মতই ইজতেমা উপলক্ষে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এছাড়া প্রতিটি ট্রেনই পাঁচ মিনিট যাত্রাবিরতি করবে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে। ৪ দিন বিরতি দিয়ে ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ বছরের বিশ্ব ইজতেমা।
২০২১ সালের বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ : এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে আগামী বছরের ইজতেমার তারিখ জানিয়ে দিয়েছেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা জোবায়েরপন্থি অংশ।
বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বি মো. মেজবাহ উদ্দিন জানান, ২০২১ সালের ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি প্রথম দফা এবং ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফার ইজতেমা হবে। তার আগে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা হবে চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর।