আমার মায়ের ঘর

123

ওই যে দূরে দাঁড়িয়ে একা ছোট্ট একটা সাঁকো
আলোর খেলায় ক্লান্ত পথিক আমায় কেন ডাকো?
ওই যে দূরে আমার এই গাঁ কাজলা দিঘীর জল
এমন শ্যামল রূপের রানী কোথায় পাবি বল?

ওই যে ভোরের কুয়াশাদের দারুণ অভিমান
একটু পরেই কান্না হয়ে ভিজবে সবুজ খাম
শিউলি তলা হলদে সাদা করছে লুটোপুটি
তারই সাথে হলুদ গাঁদার জমেছে খুনসুটি।

ওই যে মাঠে সোনালী ধান বাতাসে দোল খায়
মাতাল হাওয়ায় মাতোয়ারা আনন্দে হারায়।
নতুন চালের পিঠাপুলি পাগল করা ঘ্রাণ
পাকা ধানের নতুন গন্ধে আকুল মন প্রাণ।

ওই যে হাঁটে গাঁয়ের বধূ নাকে শিমের ফুল
কোমর জুড়ে বিছার ঝলক, কানে সোনার দুল।
আলতা রাঙা পায়ে বাজে রিনিক ঝিনিক নূপুর
তারে দেখে জুড়ায় পরাণ সকাল সন্ধ্যা দুপুর।

ওই যে দেখো মায়ের কোলে অবুঝ শিশুর খেলা
আদর সোহাগ ভালবাসায় যাচ্ছে বয়ে বেলা।
তারই সাথে সোনা রোদের ঝিকিমিকি হাসি
শীতের গায়ে উষ্ণতা-তাপ ছড়ায় রাশিরাশি।

ওই যে শ্যামার ধবল সে গাই,বাছুরখানা বুকে
ভালবাসায় মাখামাখি থাকে সবাই সুখে।
সেখানটাতেই আমার বাড়ি, আমার সুখের চর
সেখানটাতেই মায়ারই জাল আমার মায়ের ঘর।