আমার ‘গাঙচিল’ যেন ভালোভাবে উড়তে পারে : প্রধানমন্ত্রী

39

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে যুক্ত নতুন উড়োজাহাজ ‘গাঙচিল’ যেন ঠিকমতো কাজে লাগানো হয় সে বিষয়ে যত্নশীল হতে রাষ্ট্রীয় এই বিমান পরিবহন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহব্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন আসা বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি উদ্বোধন করেন তিনি।
আন্তরিকতা ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করার জন্য বিমানের কর্মীদের প্রতি আহব্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে দেশ যদি উন্নত হয়, অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়, দেশের উন্নতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সকলেই সুন্দর জীবন পাবেন, সুখীভাবে চলতে পারবেন।
তিনি বলেন, বিমানগুলো আমরা এনে দিচ্ছি সেগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা, যারা এর সাথে সম্পৃক্ত আছেন এটা সকলের দায়িত্ব। কারণ এটা নিজের দেশ, নিজস্ব সম্পদ। সে কথা মনে রেখে আপনাদের কাজ করতে হবে। আমার ‘গাঙচিল’ যেন ভালোভাবে উড়তে পারে, সবাই যত্ন নেবেন। বিমানের যাত্রী সেবার মানোন্নয়ন এবং সুনাম বৃদ্ধির প্রত্যাশা জানান প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের
এখন থেকে আর বিদেশি ঋণ না নিয়ে নিজেদের অর্থে উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আগে আমরা বিদেশ থেকে টাকা ধার করতাম। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের (দেশি) ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিমান ক্রয় করব, যেন অন্যের কাছ থেকে আমাদের ধার না নিতে হয়। অর্থাৎ আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।
প্রয়োজন অনুসারে উড়োজাহাজ কেনা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপাতত দুটি কার্গো উড়োজাহাজ কেনা হবে। আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য কার্গো বিমান আমরা কিনব। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেখান থেকে ভালো পাওয়া যায় সেটা বিবেচনা করতে হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের রুট বাড়ানো নিয়ে তিনি বলেন, বোয়িং থেকে আমাদের নবম প্লেনটা আসল। আরেকটা আসলে ১০টা হবে। কাজেই বোয়িং থেকে আমরা ১০টি প্লেন কিনলাম। তবে এখনও আমরা আমেরিকা যেতে পারছি না। আশা করি, খুব শিগগির এই সমস্যার সমাধান হবে। কারণ যে বিমানগুলো কেনা হয়েছে এগুলো সরাসরি আমেরিকা যাওয়ার সক্ষমতা রাখে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের রক্ত দিয়ে গেছেন, তার রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। ২৯টি বছর হারিয়ে গেছে, এটা দুর্ভাগ্যের। এই সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা উন্নয়ন করেনি, করতেও চায়নি। কারণ যারা ছিল তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করত না।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সঙ্গে ১০টি নতুন বিমান কেনার চুক্তি করে। এর মধ্যে চারটি ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি ৭৩৭-৮০০ এবং চারটি ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ উড়োজাহাজ ছিল।
২৫ জুলাই সিয়াটল থেকে সরাসরি দেশে আসে গাঙচিল (তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার)। এর ফলে বোয়িংয়ের নয়টি উড়োজাহাজ বহরে পেল বিমান।
বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারহাত হাসান জামিল অনুষ্ঠানে বলেন, রাজহংস’ নামে চতুর্থ বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার আগামী ১২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসবে। তখন বাংলাদেশের মোট নিজস্ব উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০টিতে, আর উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬-তে। বাকিগুলো বিভিন্ন মেয়াদে ভাড়া নেওয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দে বিমানের ১০টি বোয়িং উড়োজাহাজের নাম রাখা হয়েছে। এগুলো হল- পালকি, অরুণ আলো, আকাশ প্রদীপ, রাঙা প্রভাত, মেঘদূত, ময়ূরপঙ্খী, আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস।