আব্দুল মালেক উকিল (১৯২৪-১৯৮৭)

91

আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ আব্দুল মালেক উকিল ১৯৮৭ সালের ১৭ অক্টোবর মারা যান। তিনি ইস্ট বেঙ্গল মুসলিম ছাত্র লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। পরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হন। ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। আব্দুল মালেক উকিল ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নোয়াখালী আহমদিয়া উচ্চ মাদ্রাসা থেকে সাধারণ গণিতে লেটার মার্ক নিয়ে মাদ্রাসা পরীক্ষায় ছাত্রবৃত্তিসহ উত্তীর্ণ হন। এরপর কয়েক বছর শিক্ষা বিরতি দেন। সে সময় তিনি কলকাতায় ছিলেন। ১৯৪৭ সালে যশোর জেলার মাগুরা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন। পরের বছর এমএ পাস করেন এবং একই প্রতিষ্ঠান থেকে এলএলবি কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৫২ সালে নোয়াখালী জেলা বারে অ্যাডভোকেট হিসেবে পেশা জীবন শুরু করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা হাই কোর্ট বারের সদস্যপদ লাভ করেন। তিনি ছাত্র জীবনেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন ইস্ট বেঙ্গল মুসলিম ছাত্র লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। ১৯৪৬ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলা, বিহার ও আসামে প্রচারণা চালান।
তিনি ১৯৫৩ সালে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২-৬৪ সময়কালে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে ছিলেন। তিনি ১৯৫৬, ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা এবং সংযুক্ত প্রাদেশিক পরিষদ ও বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। ছয় দফা আন্দোলনের সময় মালেক উকিলকে গ্রেফতার করে গৃহবন্দি রাখা হয়। ১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে লাহোরে অনুষ্ঠিত গোল টেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে নোয়াখালী থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
আব্দুল মালেক উকিল বহুবার কারাবাসের সম্মুখীন হন। ১৯৪৮ সালে ১১ মার্চ তাকে প্রথম গ্রেফতার করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ও ১৯৫৪ সালের জুন মাসে ইস্ট বেঙ্গল পাবলিক সেফটি অধ্যাদেশ অধীনে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেনাবাহিনী তাকে কারাগারে পাঠায়।
আব্দুল মালেক উকিল বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাকিস্তান শিল্প কাউন্সিল ও নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরির সচিব ছিলেন। তিনি নোয়াখালী কলেজ, মাইজদী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মাইজদী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও বাধের হাট আব্দুল মালেক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা।
তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট