আবরার হত্যার অভিযোগপত্র এক সপ্তাহের মধ্যে

21

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডে কার কতটুকু দায় ছিল তা চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেছেন, মামলা তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ এক সপ্তাহের মধ্যে চার্জশিট দিতে পারবে বলে তারা আশা করছেন। গতকাল শুক্রবার এফডিসিতে এক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তদন্তের যে অগ্রগতি ও প্রস্তুতি, আশাবাদী যে এক সপ্তাহের মধ্যে চার্জশিট হবে’।
‘আবরার হত্যাকান্ডের জন্য ছাত্র রাজনীতি না মূল্যবোধের অবক্ষয়- কোনটি দায়ী’ শীর্ষক এ বিতর্ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ জানতে চেয়েছিলেন, আবরারের খুনিদের সবাইকে পুলিশ ধরতে পেরেছে কি না। উত্তরে মনিরুল বলেন, পুলিশ যখন কোনো ঘটনার তদন্ত করে অভিযোগপত্র তৈরি করে, তখন সেখানে কার কি অপরাধ, কে হুমুকদাতা, পরিকল্পনাকারী কে- এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করতে হয়। বিবেকের দংশনে হোক অথবা যে কোনো কারণে হোক, আসামিদের অনেকে যার যা দায়, সে দায়টুকু স্বীকার করে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তির পাশাপাশি আমাদের তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের যে সক্ষমতা রয়েছে, তার মাধ্যমে কার কতটুকু দায়, ইতোমধ্যে আমরা নির্ধারণ করেছি এবং সেভাবে চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। খবর বিডিনিউজের
বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন আবরারের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে মোট আটজন তাদের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, যাদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। আবরারকে কিভাবে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক পেটানো হয়েছিল, সেই ভয়ঙ্কর বিবরণ উঠে এসেছে তাদের জবানবন্দিতে।
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, হত্যাকান্ডের পর শেরেবাংলা হলে গিয়ে সঠিক তথ্যের অভাবে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল পুলিশকে। সেখানে আসলে কি সংঘটিত হচ্ছে- সেটি পুলিশ তখনও জানতে পারেনি। এটি ছিল পুলিশের পক্ষে ঘটনাটা প্রতিহত করা বা কখন আবরার প্রাণ হারিয়েছে- সেরকম কোনো তথ্য আসলে ছিল না। শোনা যাচ্ছিল ভেতরে একটু গোলমাল হচ্ছিল, কি গোলমাল, কোন বিষয়ে, কতটুকু- তা পুলিশের জানা ছিল না। প্রধান বাধা ছিল তথ্যের অপর্যাপ্ততা। উপযুক্ত তথ্য পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারত’।
আবরারকে সেদিন সন্ধ্যার পর ওই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে নির্যাতনের পর দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মাঝামাঝি জায়গায় তাকে অচেতন অবস্থায় ফেলে যায় কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। ভোরে চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ তখন সেখানে গিয়েছিল জানতে চাইলে মনিরুল বলেন, ‘সবকিছু রেকর্ডেড। সঠিক সময়টা এই মুহূর্তে প্রকাশ করতে চাই না। চার্জশিট যাবে, সেখানে সবকিছু উল্লেখ থাকবে’।