আফগানদের বিপক্ষে আজ টাইগারদের ‘ডু অর ডাই’

38

ছয় ম্যাচে পয়েন্ট নাই একটিও। ফলে তিন ম্যাচ বাকী থাকলেও এবারের বিশ^কাপ ক্রিকেটে নিজেদের বড় কিছু করার আশা একেবারেই শেষ আফগানদের। আর ছয় ম্যাচে দুই জয় আর এক ড্র নিয়ে পাঁচ পয়েন্ট বাংলাদেশের। বাকী তিন ম্যাচ আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি হয়ে উঠেছে ‘বাঁচা-মরার লড়াই’। সাউদাম্পটনের রোজ বোলে আজকের এ ম্যাচটি টাইগাররা নিজেদের করে নিতে পারলে শেষ চারের আশা কিছুটা হলেও বেঁচে থাকবে। আর তা না হলে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্বকাপের এবারের আসর থেকে নিজেদের বিদার ঘণ্টা বেজে যাবে।


বলার অপেক্ষাই রাখে না, এমন সমীকরণ যে কোনো দলের জন্যই বাড়তি চাপের কারণ। সেটা হোক বিশ্বকাপে বা যে কোনো টুর্নামেন্টে।
তবে টাইগার হেড কোচ স্টিভ রোডসের কথায় চাপের লেশমাত্রও দেখা গেল না। বরং অন্য আট-দশটি ম্যাচের মতোই তিনি এই ম্যাচটিকে দেখতে চাইছেন। তার যুক্তি হলো, বাঁচা-মরা শব্দ দুটি মাথায় রাখলে শিষ্যরা দিক হারাতে পারে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আপনি যদি ম্যাচটিকে বাঁচা-মরার বলেন তাহলে এটা দলের ওপর চাপ তৈরি করবে। আমি চাইছি না দলের কেউ এমন চাপ নিয়ে মাঠে নামুক। যেহেতু তারা ভালো করেই জানে ম্যাচটি তাদের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ। আর আমার দায়িত্ব হলো ওদের ম্যাচের প্রতি মনোযোগী করে তোলা, স্মার্ট খেলা উপহার দেওয়া। সেটা করতে পারলেই আমাদের ম্যাচটি জেতার সুযোগ থাকবে। আমি চাইব ওদের ওপর থেকে চাপ সরিয়ে নিতে।’
এদিকে, বিশ্বকাপের চলতি আসরে শুরু থেকে প্রত্যাশিত ছন্দে দেখা যায়নি স্পিন বিষে ভরা আফগানদের। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগ পর্যন্ত রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবীর মতো ঘূর্ণি যাদু চালানো বোলার ছিলেন নিজেদের ছায়া হয়েই। কিন্তু রোজ বোলের মন্থর উইকেটে কোহলিদের বিপক্ষে ভোজবাজির মতো বদলে যায় দলটি। শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে বুক চিতিয়ে লড়েছে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত। মন্থর উইকেটের সুযোগ শতভাগ কাজে লাগিয়ে টিম ইন্ডিয়াকে বিপাকে ফেলে দিয়েছিল।
বাংলাদেশের বিপক্ষেও একই উইকেটে খেলবে কাবুলিওয়ালার দেশের ক্রিকেট যোদ্ধারা। কাজেই উইকেট ও কন্ডিশনের সুবিধা টাইগারদের চাইতে কিছুটা হলেও বেশি পাবেন নবী, রশিদ, মুজিবরা । এ তিন পরীক্ষিত’র সাথে নতুন যোগ লেগ স্পিনার রহমত শাহ। টাইগার কোচও সে বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলেন না।
পক্ষান্তরে বাংলাদেশের কাছে উইকেটটি একেবারেই অচেনা। অবশ্য খেলাটি যেহেতু ক্রিকেট সেহেতু চেনা, অচেনায় কি বা এসে যায়। এমন অচেনা উইকেটে কত দলকেই তো প্রবল বিক্রমে গুঁড়িয়ে দিয়েছে লাল সবুজের দল।
আরেকটি বিষয় হল, পয়েন্টহীনতার পাশাপাশি বাংলাদেশের চাইতে র‌্যাংকিংএও পিছিয়ে আফগানরা। ফলে তাদের হারাবার কিছু নেই যা তাদেরকে চাপমুক্তভাবে খেলার সুযোগ দেবে। অপরদিকে সদ্য টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া আফগানদের বিপক্ষে ১৯ বছর আগে আইসিসির পূর্ণ সদস্যের মর্যাদা পাওয়া বাংলাদেশ কতটা চাপহীনভাবে খেলতে পারে তাও এ ম্যাচের নিয়ামক হতে পারে। তবে বিগত ম্যাচগুলোর যে পারফর্ম্যান্স তাতে আফগান ঘূর্ণি বোলারদের সাথে টাইগার ব্যাটসম্যানদের দ্বৈরতই দেখা যাবে তাতে কোন সন্দেহ নাই।
আজ বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল সাড়ে ৩টায়।
ক্যাপশন: আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামার আগে শেষ দিনের প্রস্তুতি মাঠে টাইগারদের বর্তমান ও সাবেক অধিনায়কের সাথে রণপরিকল্পনা সাজাচ্ছেন কোচ স্টিভ রোড্স