আন্তর্জাতিক সুখ দিবস আজ সুখী হওয়ার পাঁচ উপায়

154

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক সুখ দিবস পালন করা হবে বিশ্বের অনেক দেশে। তবে আপনি যদি সেই অনুভূতি পুরোপুরি না পেয়ে থাকেন, চিন্তার কিছু নেই, আপনি জেনে নিতে পারেন কিভাবে একজন সুখী মানুষ হওয়া যায়।
ঠিক যেভাবে সংগীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদরা চর্চা করেন, অন্যদের শেখান, তাদের উন্নতিতে সহায়তা করেন, ঠিক একই ভাবে চর্চা করে শেখা যেতে পারে যে, কিভাবে নিজেকে একজন সুখী মানুষ হিসাবে গড়ে তোলা যায়।
সুখী হওয়াটা এমন একটা ব্যাপার নয় যে, এটা এমনি এমনি ঘটে গেল। আপনাকে এজন্য অভ্যাস করে করে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে, বলছেন, লুরি স্যান্তোস, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যার একজন অধ্যাপক।
তিনি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন যে, কীভাবে খারাপ লাগা বা দুঃখের বিষয়গুলোকে ভুলে যেতে হবে।
এখানে অধ্যাপক স্যান্তোসের সেরা পাঁচটি পরামর্শ তুলে ধরা হলো, যা অনুসরণ করার জন্য তিনি বলে থাকেন।
১. প্রাপ্তির একটি তালিকা করুন : শিক্ষার্থীদের এমন একটি তালিকা তৈরি করার জন্য বলে থাকেন তিনি, যেগুলোকে তারা নিজেদের জীবনে প্রাপ্তি বলে মনে করেন। এই তালিকা তৈরির কাজটি প্রতিদিন রাতে একবার হতে পারে বা অন্তত সপ্তাহে একবার করতে হবে।
২. বেশি ঘুমান আর ভালো থাকুন : এখানে চ্যালেঞ্জটা হলো, প্রতি রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানো, এবং সেটা হতে হবে সপ্তাহের সাতটি রাতেই। এই সাধারণ বিষয়টি অর্জন করা অনেকের কাছে অনেক কঠিন একটি বিষয় বলে মনে হয়, বলছেন স্যান্তোস।
৩. ধ্যান : প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট ধ্যান করুন, সপ্তাহের প্রতিটি দিন। স্যান্তোস বলছেন, যখন তিনি শিক্ষার্থী ছিলেন, নিয়মিত ধ্যান তার ভেতর ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি করতো।
৪. পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আরো বেশি সময় কাটানো : সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটানো গেলে সেটা মানুষকে প্রফুল্ল বা সুখী করে তোলে। যাদের আমরা পছন্দ করি, তেমন মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো- অথবা ব্যক্তিগত ভালো সম্পর্ক ও সামাজিক যোগাযোগের ফলে মানুষের মধ্যে একটা আনন্দ এবং স্বস্তি তৈরি করে, যা আসলে তাদের ভালো থাকাকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
৫. সামাজিক মাধ্যমে কম সময় আর বাস্তব যোগাযোগ বৃদ্ধি : সামাজিক মাধ্যম অনেক সময় আমাদের মিথ্যা সুখের আবহ দিতে পারে, বলছেন স্যান্তোস, কিন্তু তাতে ভেসে না যাওয়ার মতো সতর্ক থাকতে হবে।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে, যেসব মানুষ ইন্সটাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো বেশি ব্যবহার করে, তারা ওইসব মানুষের চেয়ে কম সুখী হয়ে থাকে, যারা ওগুলো বেশি একটা ব্যবহার করে না।

বিশ্বের কোন শহর সবচেয়ে
ব্যয়বহুল, কোনটি সস্তা
বিবিসি বাংলা

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরগুলোর তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস সেইসঙ্গে হংকং এবং সিঙ্গাপুরের নাম। বিশ্বের বিভিন্ন শহরের জীবনযাত্রার মূল্যমান তুলনা করে দ্য ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রতিবছর এই জরিপ পরিচালনা করে থাকে। এবার ১৩৩টি দেশে এই জরিপ করা হয়। গত ৩০ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্যারিস, হংকং এবং সিঙ্গাপুরের নাম শীর্ষে স্থান পেয়েছে।
প্যারিস, গত বছরের শীর্ষ ১০ ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। এছাড়া ঐ তালিকায় সেবার ইউরোপের আরও তিনটি শহরও ছিল। জরিপে ১৩৩টি দেশের খুব সাধারণ ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম তুলনা করা হয়। যেমন- কোন শহরের পাউরুটির দাম কতো? আর এই তুলনামূলক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মাপকাঠি হিসেবে ধরা হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরকে। মূলত নিউ ইয়র্কের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মূল্যের সাথে তুলনা করা হয় ওই ১৩৩টি শহরের জীবনযাত্রার দাম।
প্রতিবেদনটির লেখক রক্সানা বলেছেন যে প্যারিস ২০০৩ সাল থেকেই সবচেয়ে ব্যয়বহুল শীর্ষ দশ শহরের তালিকায় ছিল। এ থেকে ধারণা করা যায় যে, বসবাস করার ক্ষেত্রে প্যারিস আসলেও অত্যন্ত ব্যয়বহুল শহর। ইউরোপের অন্য শহরগুলোর তুলনায় এখানে শুধুমাত্র মদ, পরিবহন ও তামাকের দামেই ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। আর বাকি সবকিছুর দামই আকাশছোঁয়া।
উদাহরণস্বরূপ, একজন নারীর চুল কাটার পেছনে কতোই বা খরচ হতে পারে। তবে প্যারিসে সামান্য চুল কাটার জন্য গুনতে হবে ১১৯ ডলারেরও বেশি। যেখানে কিনা জুরিখে খরচ হয় প্রায় ৭৪ ডলার এবং জাপানের শহর ওসাকাতে লাগে ৫৪ ডলার।
ইউরোপীয় শহরগুলোতে সাধারণত সবচেয়ে বেশি খরচ হয় গৃহস্থালির পণ্য, ব্যক্তিগত যতেœর পণ্য, বিনোদন এবং বিনোদন সংক্রান্ত অন্যান্য নানা পণ্য ও সেবা কিনতে গিয়ে। আর এই প্রতিটি ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় প্যারিস-বাসীদের।- এমনটাই বলেছেন তিনি।
বিশ্বের শীর্ষ ব্যয়বহুল শহর : ১. সিঙ্গাপুর (সিঙ্গাপুর), ২. প্যারিস (ফ্রান্স), ৩. হংকং (চীন), ৪. জুরিখ (সুইজারল্যান্ড), ৫. জেনেভা (সুইজারল্যান্ড), ৬. ওসাকা (জাপান), ৭. সিউল (দক্ষিণ কোরিয়া), ৮. কোপেনহেগেন (ডেনমার্ক), ৯. নিউ ইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র), ১০. তেল আবিব (ইসরায়েল), ১১. লস অ্যাঞ্জেলস (যুক্তরাষ্ট্র)
মুদ্রাস্ফীতি এবং অস্থির মুদ্রা বাজারের ফলে এ বছর সবচেয়ে সস্তা শহরের তালিকায় বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। এবারে জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় অনেক পিছিয়ে পড়েছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, তুরস্ক ও ভেনিজুয়েলার মতো দেশগুলো।
ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস, এই বছরের জরিপে সবচেয়ে সস্তা শহর হিসেবে শীর্ষস্থান পেয়েছে। এর কারণ গত বছর দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ১,০০০,০০০%। যার কারণে দেশটির সরকার বাধ্য হয়েছিল ভেনেজুয়েলায় নতুন মুদ্রা চালু করতে।
দ্য ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের মতে, রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক ভাঙনের কারণে বিশ্বে সস্তা শহরের সংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলছে।
বিশ্বের সস্তা শহরের তালিকা : ১. কারাকাস (ভেনেজুয়েলা), ২. দামেস্ক (সিরিয়া), ৩. তাশখন্দ (উজবেকিস্তান), ৪. আলমাটি (কাজাখিস্তান), ৫. ব্যাঙ্গালোর (ভারত), ৬. করাচী (পাকিস্তান), ৬. লাগোস (নাইজেরিয়া), ৭. বুয়েনস আয়ার্স (আর্জেন্টিনা), ৭. চেন্নাই (ভারত), ৮. নয়া দিল্লি (ভারত)।